হিন্দু বলিপ্রথায় নিষেধ, অথচ মুসলিম কুরবানীপ্রথায় নয় কেন? প্রশ্ন জনগণের!

 

অমিত সরকার : উপন্যাস টি একটি ঐতিহাসিক উপন্যাস । “রাজর্ষি” এই উপন্যাসে দেখা যায় যে রাজা ইন্দ্রনারায়ন একদিন সকাল এ নদীতে স্নান করতে গিয়ে হাসি ও তাতা নামের দুই ভাইবোন এর সাথে দেখা হয়। তাঁর সাথে এই দুই ভাই বোনের অনেক ভাল সম্পর্ক গড়ে ওঠে । একদিন তাঁদের নিয়ে মহিষবলির পরের দিন বেড়ানোর সময় দেখেন যে নদীর ঘাটে রক্তের দাগ । হাসি জিজ্ঞেস করে ও রক্তের দাগ কিসের? রাজা উত্তর দিতে না পারায় হাসি তার আঁচল দিয়ে নদীর ঘাট মুছতে থাকে। এর পরেই হাসি জ্বরে মারা যায় ও জ্বরের বিকার এ বলতে থাকে “ও রক্তের দাগ কিসের?”। এরপরই রাজা ঘোষণা দেন যে রাজ্যে সব বলি দেওয়া বন্ধ। কিন্তু বাধ সাধে রঘুপতি পুরোহিত ও রাজার বড় ভাই । তাঁরা বলতে থাকে রাজার বলিদানপ্রথা বিলোপের জন্য রাজ্যের অবনতি অবসম্ভাবী। শেষ পর্যন্ত রাজ্য ছাড়া হয় রাজা,তাঁর নতুন পুরোহিত বিল্বন। রাজ্যে রাজা হয় রাজার বড় ভাই । কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভুল বুঝতে পারে রঘুপতি ছুঁড়ে ফেলে দেয় কালীর মূর্তি,বুঝতে পারে নরবলি ও বলিদান ভিত্তিহীন। শেষপর্যন্ত জয় হয় মানবতার সবাইকে হার মানতে হয় রাজা ইন্দ্রনারায়ন ও বিল্বন এর কাছে। রবীন্দ্রনাথ জয় ঘটান মানবতার।

কি বলছে বলি সম্পর্কে ত্রিপুরার রায় ঃ
ত্রিপুরার বিচারপতি সঞ্জয় কারোল ও বিচারপতি অরিন্দম লোধার বেঞ্চের পক্ষ থেকে এদিন বলা হয়, মাতা ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে রোজ বলি দেওয়ার রেওয়াজও নিষিদ্ধ করা হল।ও রাজ্যে বন্ধ হল যে কোনও ধরনের পশু-পাখি বলি দেওয়ার প্রথা।

সরকারি আইনজীবী আদালতে বলেন, ‘হিন্দু ধর্মের প্রথা অনুযায়ী পশু বলি দেওয়া অত্যন্ত পুরনো একটি রেওয়াজ। তাই এই প্রথা বন্ধ করা যায় না।’ বেঞ্চের পক্ষ থেকে বলা হয়, এটি কোনও পুরনো রেওয়াজ নয়। কেউ পশু বলি দিতে চাইলে তা সরকারি খামারে রাখা হোক।

IMG 20190930 WA0040
এবার আসা যাক কুরবানি প্রসঙ্গে, ইসলামে হিজরী ক্যালেন্ডারের ১২ তম চন্দ্র মাসের জিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখ সকাল থেকে ১৩ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত কুরবানী করার সময় হিসেবে নির্ধারিত। । এ দিনে বিশ্ব জুড়ে মুসলমানরা কুরবানী দেয় যার অর্থ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার খুুুশীর জন্য নির্দিষ্ট দিনে একটি পশুকে জবেহ করা। ইহা পুত্রের পরিবর্তে ইব্রাহিমের একটি মেষের আত্মত্যাগের পুনরাবৃত্তি, যা ইহুদীধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা এবং ইসলামবিশ্বাস করে ঘটনাটিকে। এ উপলক্ষ্যে ইসলামি ধর্মপ্রচারকগণ উক্ত ঘটনাটির উল্লেখকরে মানবতায় সেবায় মুসলমানদেরকে তাদের সময়, প্রচেষ্টা এবং সম্পদ নিয়ে এগিয়ে আসতে উজ্জীবিত করে থাকে।

ফিকহের শাখা মেনে নেয় যে পশুটিকে অবশ্যই জবেহর নিয়ম মেনে হত্যা করতে হবে এবং পশুটি একটি গৃহপালিত ছাগল, ভেড়া, গরু বা উট হতে হবে।

সম্পর্কিত খবর