বাংলা হান্ট ডেস্ক: মা সিরিয়াল কিলার। একের পর এক খুন। হাসিখুশি স্বভাবের এক গৃহবধূ করে চলেছে একের পর এক খুন। হত্যার শিকার স্বামী সহ পরিবারের ৬ জন। কী ভাবে একজন গৃহবোধু সিরিয়াল কিলার হতে পারে ন, এই রহস্যভেদ করতেই এখন হিমশিম খাচ্ছে কেরল পুলিশ। ২০০২ সাল থেকে স্বামী-সহ পরিবারের ছ’জনকে খুনের অভিযোগে গত শনিবার জলি সাজু নামে ওই গৃহবধূকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁকে জেরা করার পর তদন্তকারী অফিসারদের সন্দেহ, জলি সাইকোপ্যাথ, আর সেই কারণেই একের পর এক খুন।
পুলিশ সূত্রের খবর, জলি র প্রথম খুন এর স্বীকার ১৭ বছর আগে জলির শাশুড়ি। ২০০২ সালে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান জলির শাশুড়ি ৫৭ বছরের আন্নাম্মা টমাস। মনে করা হয়েছিল, সেটি স্বাভাবিক মৃত্যু।কিন্তু তার পেছনেও কাজ করেছিল তীক্ষ্ম বুদ্ধি। তার ছ’বছর পরে আন্নাম্মার স্বামী অর্থাৎ জলির শ্বশুর টম মারা যান।
তারপর ২০১১ সাল। মৃত্যু হয় জলির স্বামী রয় টমাসের। ময়নাতদন্তে বিষক্রিয়ার বিষয়টি সামনে এসেছিল। তার তিন বছর পর একই ভাবে মৃত্যু হয়েছিল আন্নাম্মার ভাই ম্যাথুর।কারন সেই বিষক্রিয়া। স্বামী রয়ের মৃত্যুর পর তাঁর খুড়তুতো ভাই সাজুকে বিয়ে করেছিলেন জলি। ২০১৬ সালে সাজু-র প্রাক্তন স্ত্রী এবং দু’বছরের মেয়ে অ্যালপাইনের মৃত্যু হয়।রহস্য আরও ঘনীভূত হওয়ায়, সম্প্রতি পরিবারের এক সদস্যের অভিযোগে ফের তদন্ত শুরু হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে কবর খুঁড়ে নিহতদের দেহের ফরেন্সিক পরীক্ষা করায় পুলিশ। জানা যায়, মৃত্যুর আগে প্রত্যেকেই কিছু খেয়েছিলেন এবং প্রত্যেকের শরীরে সায়ানাইডের অস্তিত্ব মেলে।এখানেই উঠে আসে প্ল্যানিং সহকারে খুনের বিষয়টি।
গ্রেফতার করা হয়েছে জলির পরিচিত এম ম্যাথিউ এবং প্রাজু কুমারকে। পুলিশ জানতে পেরেছে, গয়না কারখানার কর্মী প্রাজু সায়ানাইড পৌঁছে দিতেন ম্যাথিউকে। তাঁর কাছ থেকে সায়ানাইড পেতেন জলি।আর তার পরই একের পর এক খুন।
কেরল পুলিশের ডিজি লোকনাথ বেহরার মতে, জলির দ্বৈত সত্তা রয়েছে— তিনি গৃহবধূ পাশাপাশি, এক জন সিরিয়াল কিলারও।এটি একটি গুরুতর মানসিক ব্যাধি যেখানে একজন মানুষের ভেতরেই কাজ করে দুটি পৃথক সত্ত্বা। এক তদন্তকারী অফিসারের কথায়, ‘‘জলি হাসিখুশি স্বভাবের, ব্যবহারও স্বাভাবিক। কিন্তু যে সব প্রমাণ পেয়েছি, তা থেকে স্পষ্ট তিনি সিরিয়াল কিলার। জলির মানসিকতা বুঝতে দক্ষ মনোবিদের সহায়তা নিতে বলা হয়েছে তদন্তকারীদের।’’ জলির ছেলে ২১ বছরের রোমো রয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, খুনের ঘটনায় তাঁর মা জড়িত তা তিনি বিশ্বাস করতে পারছেন না। কে জানে , পরবর্তী শিকার তার নিজের ছেলে ছিল নাকি।