বাংলা হান্ট ডেস্ক : বিশ্বের সমস্ত দেশের ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যায় কোনও না কোনও ভাবেই এমন কিছু মুহূর্ত তৈরি হয় যেখানে দেশের সাধারণ মানুষ এক জোট হয়ে লড়াই করেই তা নির্মূল করার চেষ্টা করে। কিন্তু তা হয়তো অতীত কারণ যুগ এবং সমাজ বদলানোর সঙ্গে সঙ্গে গোটা বিশ্বের মানচিত্রটা বদলে যাচ্ছে, সমস্ত কিছুই এখন যেন আশা আকাঙ্ক্ষার বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শুধুই যেন হানাহানি, লোভ আর লালসা। তাই তো রাজনৈতিক ক্ষেত্রে যেমন মানুষ ভোট এর মাধ্যমে ন্যায্যতা খুঁজে নেয় , তেমনই প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষের পাওয়ার আশা বেশি হয়ে গেছে। তাই তো 2012 সালে ভারতের রাজধানী শহরে 23 বছরের এক প্যারা মেডিকেল ছাত্রীর ওপর যে বর্বর ও নারকীয় অত্যাচার হয়েছিল তা যেন এক দৃষ্টান্ত উদাহরণ হয়ে আছে ভারতের ইতিহাসে। 16 ডিসেম্বর তারিখে তেইশ বছরের এক তরুণীকে যেভাবে চলন্ত বাসে ধর্ষণ করা হয়েছিল তারপর শাস্তির দাবিতে ন্যায় বিচারের দাবিতে রাস্তায় রাস্তায় সাধারণ মানুষ এক হয়েছিলেন কিন্তু বেশি দিনের জন্য নয়। তা যেন অতীত।
ঘটনার ঠিক সাত বছরের মাথায় আবারও দেশের বুকে এমনই এক নারকীয় ঘটনা ঘটলেও হায়দরাবাদে। এক পশু চিকি সককে গণধর্ষণ করে হত্যা করা হল, 28 নভেম্বর তারিখেই ওই ঘটনার পর মহিলা পশু চিকিত্সকের দগ্ধ দেহ উদ্ধার হয় স্থানীয় একটি কালভার্টের কাছে। সেই সাত বছর আগের মতো আবারও যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে এবং যৌন নির্যাতন অবসানের জন্য আন্দোলনের দাবি উঠেছে দেশ জুড়েই।
আর ঠিক তখনই রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু দোষীদের শাস্তি দিয়ে কী হবে? এই প্রশ্ন তুলে নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধ একটি সামাজিক রোগ, যার সমস্ত ক্ষেত্রেই এখনও বর্তমান তবে এটি কখনওই চলতে পারে না। একই সঙ্গে তিনি আরও জানান এই ধরনের অমানবিক কাজ যারা করে তাদের কখনও ক্ষমা করা যায় না।
উদাহরণ হিসেবে দেখা যায় কুলদীপ সিঙ্গার, যার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে আর তাকে যদি বা বিজেপি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে কিন্তু আবার তাঁকেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে আদিত্যনাথ যোগী সকলেই স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
স্বামী চিন্ময়ানন্দ, প্রাক্তন এই বিজেপি মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন এক আইনের ছাত্রী, বর্তমানে যিনি ধর্ষণের অপরাধে আপাতত জেল বাস করছেন। ই শুধুমাত্র কুলদীপ বা সমীচীন মনে নন্দাই নয় এরকম অনেক উদাহরণ আছে আমাদের সমাজে। যাঁরা এক দিক থেকে সমাজকে রক্ষা করছে আবার তাঁরাই ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে, বিশেষ করে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে।
হিসেবের নিরিখে দেখা গেছে লোকসভার ২৩৩ জন সাংসদের বিরুদ্ধেই এই ধরনের ঘৃন্য কাজের রেকর্ড রয়েছে। ২০১৪ সালের লোকসভা , ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ২৯ শতাংশ প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও খুনের মতো মামলা রয়েছে। বিজেপির ১১৬ জন সাংসদের মধ্যে ৩৪ শতাংশ, কংগ্রেসের ৫৭ শতাংশ, জেডিইউ-এর ৮১ শতাংশ, ডিএমকে থেকে ৪৩ শতাংশ, তৃণমূল থেকে ৪॥১ শতংশ সাংসদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে।