বাংলা হান্ট ডেস্ক : বছর শেষ, এক অধ্যায়ও শেষ। এককথায় এক দশকের অবসান হয়ে আরও এক নতুন দশকের সূচনা লগ্নে পা দিয়ে আছি আমরা। রাত পোহালেই বর্ষবিদায়ের দিন।যদিও বছরের নিরিখে অনেক কিছুই ঘটেছে। তবে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ঘেঁটে দেখলে উঠে আসে অনেক তথ্য। দশ বছরে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বদল ঘটেছে অনেক কিছুরই। অনেক নেতামন্ত্রীদের নতুন করে আগমন হয়েছে অনেকেই আবার পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু এই এক দশকের নিরিখে দেশের দশজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা যাঁরা আমাদের দেশের সমস্ত ক্ষেত্রে কোনো না কোনো ভাবে জড়িয়ে ছিলেন বা আছেন তাঁদের নাম না করলেই নয়। আর তাই এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক সেই দশজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের সম্পর্কে-
. স্মৃতি ইরানি-ধারাবাহিক থেকে কেরিয়ার শুরু করলেও এখন রাজনৈতিক জগতের অন্যতম নক্ষত্র। এককথায় বিজেপির প্রধান মুখ হলেন এই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। বার বার বিরোধীদের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে এক প্রকার প্রতিশোধ নিয়েছেন তিনি। বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারের দুটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক সামলাচ্ছেন কোমর বেঁধে।
. অরবিন্দ কেজরিওয়াল- দিল্লীর আম আদমি পার্টির প্রতিষ্ঠাতা তথা দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী একসময়ে আন্না হাজারে অনশনের প্রধান মুখ ছিলেন। এরপর ২০১২ সালে দিল্লিতে আম আদমি পার্টি তৈরি করেছিলেন। ২০১৫ সালে দিল্লীতে নির্বাচনের সময় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে তিনি মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। দিল্লীর বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে তিনি যেভাবে বরাবর লড়াই করেছেন তা এককথায় অনবদ্য। তাই তাঁর জনপ্রিয়তাও তুঙ্গে।
. হিমন্ত বিশ্বশর্মা- যদিও তাঁর নিয়ে য়তই বলা হোক না কেন তা একান্তই কম। কারণ একসময়ে কংগ্রেসের দাপুটে নেতা হিসেবে তাঁর খ্যাতি ছিল খুব। তখন মোদী বিরোধি সভাও করেছেন। কিন্তু ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির থেকে টিকিট পেয়ে এখন মোদীর হয়ে প্রচার করেছেন। এর আগে ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স তৈরি করেছিলেন। হিমন্ত বিশ্বশর্মা এখন অসমের অর্থমন্ত্রী।
. নির্মলা সীতারমন- ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় স্থান পেয়েছেন তিনি। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন মোদী সরকারের এই প্রভাবশালী মন্ত্রী। ২০০৬ সালে প্রথম বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তারপর থেকে এখন অবধি তিনি বিজেপির অন্যান্য মন্ত্রীদের তুলনায় অনেকটাই বেশি ক্ষমতাশালী ও প্রভাবশালী।
. জগোন্মহন রেড্ডি- প্রথমে কংগ্রেসের সাংসদ কিন্তু পরে বাবার আদর্শে অনুপ্রানিত হয়ে ওয়াইএস কংগ্রেস দল তৈরি করেন। অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বাবা ওয়াইএস রাজাশেখরের মৃত্যুর পর। এরপর সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে ২২টি আসনে জয়ী হয়েছে আইএস কংগ্রেস।
. মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়- পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি ছাত্রাজীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে ওতোপ্রতো ভাবে জড়িত আছেন। রাজ্যে প্রথম রাজনৈতিক পালাবদল অর্থাত্ ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল নেত্রী মমতা নিজের দাপটের সঙ্গে রাজ্যে বিরোধীদের সঙ্গে লড়াই করে দ্বিতীয় বার অর্থাত্ ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও জয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে পরপর দুটি লোকসভা নির্বাচনেও ব্যাপক সাফল্য। দেশের অন্যতম দাপুটে ও প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের তালিকায় সর্বাগ্রে তাঁকে মনে করে হয়ে থাকে।
. অরুন জেটলি- নাহ তিনি আর আমাদের মধ্যে নেই। কিন্তু বিজেপির মন্ত্রী তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুন জেটলির মন্ত্রীত্ব পদ নিয়ে যেমন কোনো কথা হওয়ার নয় ঠিক তেমনই তাঁর রাজনীতি জীবনে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা নিয়েও কোনো কথা হবে না। বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ মোদী সরকারের অন্যতম বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন।
. কে চন্দ্রশেখর রাও- তেলেঙ্গানা আন্দোলনের প্রধান মুখ থেকে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। ১৯৮৩ থেকে কেসিআর নির্বাচনে জয়লাভ করে আসছেন। তাঁর রাজ্যে তাঁর চাহিদা নিয়ে নতুন করে কিছুই বলার নেই। কারণ ২০১৪ সালের লোকসভায় টিআরএস বেশি আসন পেয়েছিল। অন্যদিকে ২০১৮ সালে মুখ্যমন্ত্রীর মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আবারও নির্বাটিত হয়ে জয়ী হয়েছিলেন। এবারের সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনেও তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছেন।
. নরেন্দ্র মোদী- গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে অবশেষে দেশের হাল ধরেন। দ্বিতীয় বারের জন্য ২০১৯ সালের নির্বাচনেও তিনি জয়ী হয়ে দেশের মসনদে বসেছেন। এমনকি বিভিন্ন রাজ্যেও গেরুয়া শিবিরের সাফল্য ব্যাপক। দেশের একাধিক উন্নয়ন মূলক কাজে যেমন ব্রতীয় হয়েছেন তেমনি ক্ষমতায় আসার পর দেশের সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখে ব্যাঙ্ক থেকে শিল্প ও বিনিয়োগ কিংবা বেকারত্বের দিকে নজর দিয়েছেন তিনি।
. অমিত শাহ- দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। একসময়ে দলের জন্য জেলও খেটেছেন তবুও নিজের দাপট দেখিয়ে এবার দেশের মন্ত্রী সভায় জায়গা পেয়েছেন। মোদী সরকারের নীতি নির্ধারক হিসেবেও স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি।