বাংলাহান্ট ডেস্ক: যত দিন যাচ্ছে ততই বাড়ছে জৈবিক উপায়ে চাষের পদ্ধতি। বহু কৃষকই গ্রহণ করেছে এই চাষের পদ্ধতি। তবে যিনি এই চাষে সবচেয়ে বেশি নাম করেছেন তিনি হলেন কৈলাশ চৌধুরী। জৈবিক চাষ ও ‘রুরাল মার্কেটিং’-এর গুরু বলেই পরিচিত তিনি। মাত্র ৬০ টি আমলকির গাছ দিয়ে শুরু করেছিলেন চাষ। এখন তাঁর বার্ষিক রোজগার প্রায় ১.৫০ কোটি টাকা।
রাজস্থানের জয়পুরের কোটপুতলি তহশীল। নাম অজানা হলে কী হবে, জৈবিক চাষ ও অর্গানিক প্লানটসের হাব এটি। ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় হাজারেরও ওপর কৃষক এখানে জৈবিক পদ্ধতিতে চাষ করেন। তার মধ্যে অনেকের কাছেই রয়েছে নিজস্ব প্রসেসিং ইউনিট। এই সবকিছুরই কৃতিত্ব দিতে হয় কৈলাশ চৌধুরীকে। তবে তিনি বিশ্বাস করেন একটি প্রবাদে। “ঢেউকে ভয় পেয়ে যেমন নৌকা পিছিয়ে আসে না, তেমনই যারা চেষ্টা করে তাদের কখনও হার হয়না”। তাঁর নিজের জীবনও এই প্রবাদের সঙ্গে অনেকটাই মিলে যায়। দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করে তারপরেই চাষের কাজে নেমে পড়েছিলেন তিনি, বাবাকে সাহায্য করবেন বলে। প্রথমে কুয়োর মাধ্যমেই ক্ষেতে জল সেঁচ করার কাজ চলত। তারপর ১৯৭৭ সালে তিনি গ্রামের প্রধান হওয়ার পর গ্রামের ২৫টি টিউবওয়েলে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করেন।
এর ফলে ফসল উৎপাদন প্রায় দশ গুণ বেড়ে যায়। গম থেকে সরষে সবকিছুই উৎপাদন করতে থাকে গ্রামের মানুষ। শুধু তাই নয়, গ্রামে কৈলাশকে মার্কেটিং গুরুও বলেন সবাই। এখন নিজেদের ফসল নিজেরাই ঝাড়াই-বাছাই করে, প্যাকিং করে শহরে চালান দেয় গ্রামের কৃষকরা। সবটাই শিখিয়েছেন কৈলাশ। এতে আয়ও বেড়েছে অনেকটাই। কৈলাশ এতটাই জনপ্রিয় হয়ে যান যে ১৯৯৫ সালে গ্রামে কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র উদ্বোধন হলে বিজ্ঞানীরা যোগাযোগ করেন তাঁর সঙ্গে।
প্রতাপগড় থেকে মার্কেটিংয়ের খুঁটিনাটি জেনে নিজেই আমলকির লাড্ডু, জ্যাম ইত্যাদির প্রসেসিং ইউনিট শুরু করেন কৈলাশ। ভাগ্য সেখানেও সঙ্গ দেয় তাঁকে। জয়পুরের পন্ত কৃষি ভবনেই নিজের জিনিসপত্র বিক্রি করার অনুমতি পেয়ে যান তিনি। এই সময়ে সংবাদ শিরোনামে ওঠে তাঁর নাম। ‘রুরাল মার্কেটিং গুরু’ নামে পরিচিয় পান তিনি। কৈলাশের ফার্ম এখন অন্যান্য কৃষকদের কাছে একটা মডেল স্বরূপ। প্রতিবছর হাজার হাজার কৃষক এখানে আসেন ট্রেনিং নিতে। ১২৫টিরও বেশি পুরস্কার জিতেছেন কৈলাশ। তার মধ্যে রয়েছে কৃষিমন্ত্রকের তরফে প্রাপ্ত জাতীয় সম্মানও।