বাংলাহান্ট ডেস্কঃ দেশের সমস্ত চিড়িয়াখানা (zoo) ও জাতীয় উদ্যানগুলিতে আলাদা করে করোনা-সতর্কতা অবলম্বন করার নির্দেশ দিল কেন্দ্র সরকার। আজ সকালেই খবর মিলেছে, আমেরিকার চিড়িয়াখানায় একটি বাঘের শরীরে মিলেছে করোনা (corona) পজিটিভ। পশুদের মধ্যে এই প্রথম এমন ঘটনা ঘটল। এর পরেই অতিরিক্ত সতর্কতা নিল সরকার।
Government issues Advisory regarding containing and management of #COVID19 in National Parks/Sanctuaries/Tiger Reserves across the country.#IndiaFightsCorona#CoronavirusOutbreakindia pic.twitter.com/vV4lwv9uEq
— PIB India (@PIB_India) April 6, 2020
এই সতর্কবার্তা এসে পৌঁছেছে পশ্চিমবঙ্গেও। রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Rajiv Bandyopadhyay) জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের এই অ্যাডভাইজারি আসার অনেক আগে থেকেই রাজ্য সরকার সমস্ত রকম ব্যবস্থা নিয়েছে বাঘ এবং অন্যান্য পশুপাখি যাতে সুরক্ষিত থাকে সে ব্যাপারে। তিনি জানান, গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই পশুপাখিদের সুরক্ষিত রাখার জন্য অ্যান্টি-ভাইরাস সলিউশন স্প্রে করা হচ্ছে। স্যানিটাইজ়ও করা হচ্ছে চিড়িয়াখানা। পশুপাখিদের যে খাবার দেওয়া হচ্ছে, তা জীবাণুমুক্ত কিনা পরীক্ষা করে তবেই দেওয়া হচ্ছে। দর্শনার্থীদের আসা-যাওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ১৭ মার্চ থেকে।
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় আরও জানান, আজ তিনি চিড়িয়াখানার আধিকারিকের সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠকও করছেন। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, চিড়িয়াখানার পশুপাখিদের যাঁরা খাবার বিতরণ করবেন তাঁদের নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখেই খাবার দিতে হবে। পাশাপাশি চিড়িয়াখানায় যে ডাক্তার পশুদের দেখভালে থাকবেন, আজ থেকে তিনিও পিপিই পরবেন।
সোমবার সকালেই জানা যায়, নিউ ইয়র্কের ব্রঙ্কস চিড়িয়াখানায় চার বছর বয়সি একটি বাঘিনীর শরীরে হানা দিয়েছে কোভিড-১৯ ভাইরাস। নিউ ইয়র্ক শহরে করোনা সংক্রমণ এমনিতেই মারাত্মক আকার নিয়েছে। প্রতিদিন সেখানে শয়ে শয়ে মানুষ মারা যাচ্ছেন করোনায়। সেই নিউ ইয়র্কেই এই চিড়িয়াখানাটি অবস্থিত। বাঘের শরীরে এই সংক্রমণ এল কী করে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে করোনায় আক্রান্ত এক চিড়িয়াখানা কর্মীর শরীর থেকেই বাঘের মধ্যে এই সংক্রমণ ছড়িয়েছে। আইওয়ার ন্যাশন্যাল ভেটেরেনারি সার্ভিসেস ল্যাবরেটরি বাঘের শরীরে করোনা সংক্রমণের খবরটি জানিয়েছে। আক্রান্ত বাঘিনীর নাম নাদিয়া। মালয়ান টাইগার নাদিয়া, তার বোন আজ়ুল, আরও দু’টি বাঘ ও তিনটি আফ্রিকান সিংহের শুকনো কাশি হচ্ছিল। তবে পরীক্ষা করা হয়েছে শুধু নাদিয়াকেই। পশু চিকিৎসকরা অবশ্য জানিয়েছেন, নাদিয়া ও অন্য বাঘ ও সিংহেরা এই সংক্রমণ থেকে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাবে।
পশুর শরীরে নোভেল করোনা ভাইরাস কী ভাবে কাজ করে, কতটা কাবু করে তা সঠিক ভাবে জানা নেই বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ফলে আক্রান্ত বাঘিনী নাদিয়া ও তার সঙ্গীসাথীদের পর্যবক্ষণে রাখা হয়েছে। সংক্রমণ যাদের হয়েছে সেই বাঘগুলিকে চিড়িয়াখানার একটি জায়গা টাইগার মাউন্টেনে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। আক্রান্ত বাঘটি ও তার সঙ্গীদের কাশির সঙ্গে খিদেও কমে গেছে বলে চিড়িয়াখানা সূত্রে জানানো হয়েছে। তবে তারা তা সত্ত্বেও ভালই আছে, খেলাও করছে। ব্রঙ্কস-এর ওই চিড়িয়াখানার আরও চারটি বাঘ, স্নো লেপার্ড, চিতা-সহ অন্য কয়েকটি জন্তু এখনও পর্যন্ত সুস্থ আছে। তাদের কোনও রকম অসুস্থতার লক্ষণ নেই বলে জানিয়েছে চিড়িয়াখানা।