বাংলাহান্ট ডেস্কঃ করোনা ভাইরাসের (COVID-19) সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য দেশ জুড়ে জারী রয়েছে লকডাউন অবস্থা। স্তব্ধ রয়েছে সবকিছু। এই সময় চীন (China) চাইছে ভারত, আমেরিকা এবং ইউরোপের বাজারে নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে। সেই কারণে চীন তাঁদের দেশে ৬০-৭০ শতাংশ কারখানা খুলে দেয়। এবং ১১০-১১৫ আরব ডলার এই কারখানায় উৎপাদিত কাচামালের জন্য ব্যয় করে। অর্থাৎ অর্থনীতির একটা বিরাট অংশ তুলে দেয় নতুন করে দ্রব্য প্রস্তুতির জন্য।
এতকিছু করেও চীনের কিন্তু খুব একটা সুবিধা হল না। জিনিস উৎপাদন করলেও, তা ঠিকমতো রপ্তানি করতে পারছে না চীন। চীন সরকার ভেবেছিল ১৪ ই এপ্রিলের পর ভারত থেকে লকডাউন অবস্থা তুলে নেওয়া হবে। এবং তারপর চীনের দ্রব্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে। চিনা দ্রব্যে ভারতীয় বাজার ভরিয়ে ফেলার লক্ষে ছিল চীন। কিন্তু ভারতে এখনও লকডাউন অবস্থা তুলে নেওয়ার কোন পরিকল্পনা করেনি ভারত সরকার। তুলে নেওয়ার বদলে লকডাউনের সময়সীমা বাড়াতেও পারে মোদী সরকার। এমনকি লকডাউনের সময় শেষ হওয়ার আগেই উড়িষ্যার সরকার তাঁদের ওখানে লকডাউনের সময়সীমা বাড়ানোর আর্জি জানিয়েছে।
গত ১৫-২০ দিনের মধ্যে মাত্র ২.৩ বিলিয়ন ডলার অর্থের জিনিস যেমন মাস্ক এবং ভেন্টিলেটর রপ্তানি করতে পেরেছে চীন। মহামারির পরিস্থিতিতে লকডাউন তুলে দিয়ে ১১০-১১৫ আরব ডলার ইনভেস্ট করেছিল দ্রব্য উৎপাদনের জন্য। এবং আশা করেছিল প্রচুর পরিমাণে মুনাফা লাভ করতে পারবে। কিন্তু তাঁদের সেই আশায় সম্পূর্ণ জল ঢেলে যায়। এতে করে চীনের অর্থনীতিতে এর বিরাট প্রভাব পড়বে।
ব্যবসায়িক দিক থেকে ক্ষতির মুখোমুখি হওয়া ছাড়াও চীন আরও একটি সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে এখন। করোনা ভাইরাসের প্রভাবের আগে চীনের যেসকল বন্ধু দেশ ছিল, এমনকি চীন যাদেরকে বন্ধু বানাতে আগ্রহী হয়েছিল, তারাও এখন চীনের বিরুদ্ধে কথা বলছে। সাহায্য করার নাম করে ত্রুতিপূর্ণ চিকিৎসা সরঞ্জাম পাঠিয়ে স্পেন, তুর্কি, নেপাল, ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি প্রমুখ দেশকে নিজের বিরুদ্ধে করেছে চীন। নিম্নমানের মাস্ক, টেস্ট কিট ইত্যাদি পাঠানোর ফলে এখন সেইসব দেশ চীনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে। ধীরে ধীরে এইসব দেশগুলো চীনকে তাঁদের পাঠানো দ্রব্য এখন ফেরত পাঠাচ্ছে।
করোনা ভাইরাসের দ্বারা প্রভাবিত চীনকে প্রথমে তাঁর বন্ধু দেশ ইতালি বিভিন্ন চিকিৎসা দ্রব্য উপহার স্বরূপ দিয়েছিল। কিন্তু চীনের পরিস্থিতি কিছুটা ঠিক হওয়ার পর তারা ইতালিকে বন্ধুত্ব দেখানোর বদলে চড়া দামে চিকিৎসা দ্রব্য বিক্রি করেছে। এতে ইতালি হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। চীন পয়সা ছাড়া কিছু বোঝে না, তা আবারও প্রমাণিত হয়ে গেল।