বাংলাহান্ট ডেস্কঃ লকডাউনের (Lockdown) বাজারে বিপাকে পড়েছেন দেশের গরীব দুঃস্থ শ্রেণীর মানুষজন। দিন আনে দিন খাওয়া মানুষগুলো আজ কর্মহীন। দুবেলা দুমুঠো অন্ন জোগাড় করতে তারা হিমশিম খাচ্ছে। তাই এবার নিজের এলাকার গরীব মানুষদের জন্য বিনামূল্যে বাজার খুলে দিলেন পুরাতন মালদহ পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর সফিকুল ইসলাম। সরকারের কাছ থেকে চাল, ডাল পেলেও সবজি তো আর সেখান থেকে মিলছে না। তাই তিনি এই ব্যবস্থা করলেন।
করোনা ভাইরাসের (COVID-19) প্রভাবে সমগ্র বিশ্ব এখন আতঙ্কিত। কেন্দ্র সরকার নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য দেশ জুড়ে লকডাউনের ডাক দিয়েছিলেন। এই লকডাউনের সময়সীমা শেষ হবার আগেই, তা আরও বাড়ানোর দাবী জানাচ্ছে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা। সবার একটাই কথা, আগে বেঁচে থাকতে হবে। রোগের হাত থেকে বাঁচতে গিয়ে এখন বিপাকে সমাজের বেশকিছু মানুষজন। রাজনৈতিক দলের কর্মী থেকে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা সেইসব মানুষদের জন্য চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। কিন্তু ডিম, মাছ, মাংস তো দুরস্তর এই অভাবের সময় তারা সবজিটুকুও কিনতে পারছেন না।
এই সকল মানুষের কথা চিন্তা করে ওল্ড মালদহ পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর সফিকুল ইসলাম নিজেই খুলে ফেললেন বিনামূল্যের এক বাজার। যেখানে সব জিনিসই পাওয়া যাবে, কিন্তু তার জন্য কোন অর্থ দিতে হবে না। ক্রেতারা যেমন বাজারে যান, তেমনই ব্যাগ নিয়ে বাজারে আসতে হবে। এবং জিনিস কিনে পয়সা দেওয়ার বদলে, এখানে তাঁদের কিছুই দিতে হবে না।
চা, চিনি, চাল, আটা, সুজি, বিস্কুট, লবণ, তেল, মশলা, আলু, পিঁয়াজ, লঙ্কা ও সবজি সবকিছুই পেয়ে যাবেন একদম বিনামূল্যে। শনিবার সকালে এই বাজার বসে পুরাতন মালদহ পুরসভা এলাকার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের মির্জাপুরের মহানন্দা নদী লাগোয়া মাঠে। প্রায় ৮০০ পরিবার এই বাজার থেকে নিজেদের ইচ্ছে মতো বাজার করতে পারবে। যার ফলে সংকটের দিনেও হাসি ফুটেছে এলাকাবাসির মুখে।
বিনামূল্যে খাদ্য সামগ্রী পেয়ে এলাকাবাসী বেজায় খুশি। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানালেন, ‘পরিচারিকার কাজ করে আমার সংসার চলে। কিন্তু এই লকডাউনের সময় আমরা খুব সমস্যায় পড়ি। আমাদের কথা ভেবে সফিকুল সাহেবের আমাদের পাশে এগিয়ে আসায় আমরা তার কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ’।
অভিনব এই বাজার পরিদর্শনে গিয়ে মালদহ জেলা তৃণমূল সভানেত্রী তথা রাজ্যসভার সাংসদ মৌসম বেনজির নূর বলে, ”লকডাউনের বাজারে কাউন্সিলরের এই উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এইসময় ৮০০ পরিবারের হাতে তাঁদের প্রয়োজনীয় জিনিস বিনামূল্যে তুলে দেওয়া সত্যিই খুব ভালো কাজ। দেশের এই সংকটের সময় সফিকুলের এই মানুষের পাশে দাঁড়ানোয়, আমি অত্যন্ত খুশি। আমি অন্যান্য এলাকার জনপ্রতিনিধিদেরকেও এই ধরনের উদ্যোগ নিতে বলব’।