বাংলাহান্ট ডেস্কঃ আতঙ্কের মাঝেই আশার আশ্বাস। এখানে করোনা মানে ভয় নয়,আনন্দ। চোখে না দেখা জিনিস এখানে চেখে দেখতে পারবে যে কেউ। এমনই সম্ভার নিয়ে হাজির যাদবপুরের(jadavpur) হিন্দুস্তান সুইটস (Hindustan Sweets)। কর্তৃপক্ষের দাবি, করোনা যুদ্ধে মহানগরবাসীকে অভয় দিতেই এই উদ্য়োগ নিয়েছেন তারা।
নিয়মমতো টহল দিচ্ছিল পুলিশের গাড়ি। আচমকা জানলা দিয়ে ডেকে গাড়ি থামালেন অশীতিপর বৃদ্ধ। পুলিশকর্তারা স্বভাবতই ভেবেছিলেন, কোনও বিপদে পড়েছেন বৃদ্ধ। চাইছেন সাহায্য। শশব্যস্ত হয়ে গাড়ি থেকে নেমে এগিয়ে যান তাঁরা। কিন্তু এর পরেই বিস্ময় আর মুগ্ধতার যুগপৎ সমাপতনে কার্যত স্থির হয়ে যান তাঁরা। সাহায্য চাইতে নয়, সাহায্য করতে পুলিশদের ডেকেছেন বৃদ্ধ। কাঁপা হাতে এগিয়ে দিলেন ১০ হাজার টাকার চেক।
No corporate can match his donation……….an octogenarian in Kolkata waved down a police patrol & they thought he wanted some help. Police was surprised when the 82 yrs old retd college teacher handed over a cheque for State relief fund to fight #Corona from his meagre pension pic.twitter.com/XLnMlCvKAF
— Diptangshu Chaudhury (@ColDiptangshu) April 12, 2020
৮২ বছরের এই প্রাক্তন অধ্যাপকের এই অপার মহত্বের কথা এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। জানা গেছে, সুভাষচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় (Subhas Chandra Bandyopadhyay) নামের এই বৃদ্ধের বাস দমদম এয়ারপোর্টের কাছে। তাঁর জীবনধারণের প্রয়োজনীয়টুকু আসে পেনশন থেকে। বাকিটা জমে সামান্যই। সেখান থেকেই এই চেক রাজ্য সরকারের হাতে তুলে দিলেন তিনি। সেতু বাঁধল পুলিশ। বিধাননগর কমিশনারেটের এক পুলিশকর্তা বলেন, “আমরা সত্যিই প্রথমে ভেবেছিলাম, উনি সাহায্য চাইছেন। তাড়াতাড়ি এগিয়ে যাই এত বয়স্ক মানুষকে জানলা দিয়ে হাত নাড়তে দেখে। কিন্তু তার পরেই আমাদের অবাক হওয়ার পালা।”
পুলিশদের গাড়ি থামিয়ে, তাঁদের বাড়ির ভিতরে ডাকেন বৃদ্ধ সুভাষবাবু। ডেকে জানান, এখুনি তাঁর কোনও সাহায্যের প্রয়োজন নেই। কিন্তু তিনি রাজ্য সরকারের করোনা মোকাবিলা ফান্ডে কিছু অর্থ সাহায্য করতে চান। তখনই উপরতলার কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন পুলিশকর্মীরা। সম্মতি আসে দান গ্রহণের। ১৯৯৮ সালে দীনবন্ধু মহাবিদ্যালয় থেকে অবসর নেওয়া মানুষটি কাঁপা হাতে ১০ হাজার টাকার চেক লিখে এগিয়ে দেন পুলিশের দিকে। বৃদ্ধের কথায়, “সাম্প্রতিক অবস্থা নিয়ে আমি খুবই উদ্বিগ্ন। এই মহামারী কালে কিছুই করতে পারছি না, এটাও আমার অস্বস্তির কারণ। আমি উপায় খুঁজছিলাম অর্থসাহায্য করার। এটুকুই আমার পক্ষে সম্ভব। কিন্তু আমি সশরীরে যেতে পারতাম না। তাই পুলিশদের দেখতে পেয়ে ডেকে নিই। আরও কিছু দেওয়ার ইচ্ছে ছিল আমার। কিন্তু ওষুধ আর নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতেই সব বেরিয়ে যায়।”
পুলিশকর্তা বলেন, “আমরা আশ্চর্য হয়ে গেছিলাম এই কাজ দেখে। কিন্তু উল্টে উনি আমাদের বলেন, যে উনি আমাদের ডেকে এনেছেন বলে আর অনলাইন লেনদেন করতে পারেন না বলে উনি দুঃখিত। এই সৌজন্য ও বদান্যতা ভাবা যায় না আজকের দিনে।” নেটিজেনরা বলছেন, লক্ষ-লক্ষ টাকার সাহায্যও ফিকে হয়ে যাবে এই চেকটির কাছে। এটি শুধু টাকার অঙ্ক নয়, এটি একটি মানুষের জীবনের শেষ ভাগে পৌঁছেও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা।