বাংলাহান্ট ডেস্কঃ করোনা মোকাবিলায় রাজ্যের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। সম্প্রতি নবান্নকে একটি চিঠি দিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানায় তারা তাদের দুটি প্রতিনিধি দল পাঠাবে পশ্চিমবঙ্গে। এই দুটি দল রাজ্যের মধ্যে স্পর্শকাতর চিহ্নিত হওয়া ৭ জেলার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে দেখবেন। এর পাশাপাশি করোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকার কি কি ব্যবস্থা নিয়েছেন তাও খতিয়ে দেখবেন। লকডাউন (lockdown) ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল মিষ্টির দোকান। মিষ্টি প্রেমী বঙ্গবাসী মিষ্টি পাচ্ছিলেন না। আবার ক্ষতি হচ্ছিল মিষ্টির দোকানগুলির এবং তার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের। ক্ষতি হচ্ছিল দুধ ব্যবসায়ীদের। কারণ রাজ্যে হাজার হাজার মিষ্টির দোকানের জন্য প্রচুর পরিমাণে দুধের প্রয়োজন হয়। যা দুধ ব্যবসায়ীরা মেটান। দুধ ব্যবসায়ীদের কথা মাথায় রেখে লকডাউনের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত ৩০ মার্চ ঘোষণা করেন রাজ্যে মিষ্টির দোকান দিনে ৪ ঘণ্টা খোলা রাখা হবে। খোলা থাকবে দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত।
https://www.facebook.com/birbhumpolice/photos/a.788354524603833/2588955554543712/?type=3
৪ ঘণ্টা দোকান খোলা রাখলেও মিষ্টির দোকানিরা জানাচ্ছেন যে সময়ে তা খোলা থাকছে সে সময়ে বিশেষ মানুষজন তাঁদের কাছে মিষ্টি কিনতে আসছেন না। ফলে ব্যবসাও তেমন হচ্ছে না। একথা তাঁরা রাজ্য সরকারকে জানান। তারপরই বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী আর ৪ ঘণ্টা নয় রাজ্যে মিষ্টির দোকান ৮ ঘণ্টা খোলা রাখায় অনুমতি দিয়েছেন। এপ্রিল মাসের শুরুতেই লকডাউনের কারণে মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীদের ব্যবসাতে লোকসান হতে শুরু করে। এই কারণে রাজ্যের ব্যবসায়ীরা সব দুধ বিক্রি করতে না পেরে পুকুরে ফেলে দিচ্ছিলেন। তখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আংশিক সময়ের জন্য মিষ্টির দোকানগুলি খুলে রাখতে বলেন। প্রথমদিকে মিষ্টির দোকান খুলে রাখার সময় তিনি করেছিলেন ১২টা থেকে ৪টে পর্যন্ত। গত বৃহস্পতিবার এই সময় বাড়িয়ে করেছিলেন সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৪ টে পর্যন্ত।এখন কেন্দ্রের চাপে এই সময়সীমা আবার কম করে দেওয়া হলো।
প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি এই ফুল মিষ্টির দোকান খোলা রাখা নিয়ে বিরোধী পক্ষের তীব্র আপত্তি ছিলো প্রথম থেকেই। কারণ এই সময়টা এই লকডাউনটা মিষ্টি খেয়ে উৎসব পালনের জন্য নয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মধ্যে মিষ্টি, ফুলটা পড়েও না। এরপর স্ট্র্যান্ড রোডের জগন্নাথ ঘাট ফুল মার্কেটের ফুল কিনতে যাওয়া মানুষের উপচে পড়া ভিড়ের ভিডিও ট্যুইট করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। এই ফুল মিষ্টির দোকান খোলাই যে রাজ্যকে বিপদে ফেলবে তার বলার পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লকডাউন ভাঙার অভিযোগও করেন তিনি। এরপর প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্সেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বাবুলের ট্যুইট প্রসঙ্গ তুলে অভিযোগ করতে ছাড়েন নি।
“আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, আমরা সবরকম সাহায্য কেন্দ্রীয় সরকারকে করব। কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা যেন বাংলা নিয়ে উল্টোপাল্টা না বলেন। কেউ একটা ছবি ছেড়ে দিল, কেউ একটা ভিডিও ছেড়ে দিল, এসব যেন না হয়!” এরপর ফুল মিষ্টি পর্ব থেমে গেছিলো। বর্তমানে রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলা করোনা হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় আবার ফুল মিষ্টির তরজা প্রকাশ্যে উঠে এলো।
এছাড়াও পুলিশের তরফ থেকে ফের একবার সতর্ক করে জানানো হয়, “ইতিমধ্যে আমরা লক্ষ্য করেছি বেশ কিছু জায়গায় বিশেষত গ্রামাঞ্চলগুলিতে অত্যাবশ্যক দ্রব্যাদির দোকান ছাড়াও আরও অন্যান্য কিছু দোকানের লুকিয়ে খুলে রাখার প্রবণতা রয়েছে। আমরা বুঝতে পারছি এই কঠিন সময়ে অনেকেই আর্থিকভাবে বিপন্ন। সেইজন্য সরকার সব রকম ব্যবস্থাও নিয়েছে, এছাড়াও আপনাদের খাদ্যজনিত অথবা অন্যান্য যে কোনো সমস্যা থাকলে আমাদের স্পেশাল কন্ট্রোল রুমের নম্বরে যোগাযোগ করুন।”