বাংলাহান্ট ডেস্কঃ অন্নদা দেবীর অপর নাম অন্নপূর্ণা (Annapurna)। দেবীর দুই হাতে অন্নপাত্র ও দর্বী থাকে। দেবী রক্তবর্ণা, সফরাক্ষী, স্তনভারনম্রা, বিচিত্র বসনা, নিরত অন্নপ্রয়াদিনী ও ভবদুঃখহন্ত্রী। দেবীর মাথায় থাকে নবচন্দ্র, একপাশে থাকে ভূমি এবং আর এক পাশে থাকে শ্রী। এই দেবী নৃত্যপরায়ণ মহাদেব শিবকে দেখে সন্তুষ্ট হন।
পুরাণ মতে, দেবী পার্বতী মহাদেব শিবকে ভিক্ষাঅন্ন প্রদান করে, এই নামের প্রাপ্তি হন। এই দেবীর পূজা চৈত্র মাসের শুক্লাষ্টমী তিথিতে করা হয়। হিন্দু মানুষদের বিশ্বাস, এই দেবীকে সন্তুষ্ট করতে পারলে গৃহে কখনও অন্নের অভাব ঘটে না। কৃষ্ণানন্দ রচিত তন্ত্রসার গ্রন্থ এবং দক্ষিণামূর্তি সংহিতা গ্রন্থে এই দেবীর পূজার উল্লেখ পাওয়া যায়। পশ্চিমবঙ্গে এই দেবীর পূজা করা হয়। তা ছাড়াও কাশীতে দেবীর এক প্রসিদ্ধা মন্দিরে অন্নপূর্ণা পূজা ও অন্নকূট পালন করা হয়।
পুরাণ মতে বলা হয়, বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়াড় পর মহাদেব এবং পার্বটি কিছুদিন সংসার জীবন যাপন কররা পর অন্ন কষ্টের সম্মুখীন হন। তখন মাতা পার্বতীর থেকে তিরস্কৃত হওয়ার পর বাবা মহাদেব ভিক্ষা করতে বেরিয়ে পড়েন। কিন্তু মাতা পার্বতীর মায়ায় তিনি ভিক্ষা না পেয়ে শেষে কৈলাশে ফিরে আসেন এবং পালান্ন, পায়েস, পিঠে আহার করেন। এরপরই দেবীর মহিমাবৃদ্ধির জন্য কাশীতে অন্নপুর্ণা দেবীর মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন।
”ওঁ সায়ুধায়ৈ সবাহনায়ৈ সালঙ্কারায়ৈ সপরিবারায়ৈ ওঁ হ্রীং অন্নপূর্ণায়ৈ পরমেশ্বর্য্যৈ নমঃ॥” অন্নপূর্ণা দেবীর পূজা মন্ত্র। এই মন্ত্র উচ্চারণ করে দেবীকে আরাধনা করলেন, সবগসারে কোনদিন অন্নের অভাব হয় না।
”ওঁ রক্তাং বিচিত্র-বসনাং নবচন্দ্রচূড়ামন্নপ্রদাননিরতাং স্তনভারনম্রাম্।
নৃত্যন্তমিন্দুশকলাভরণং বিলোক্য হৃষ্টাং ভজে ভগবতীং ভবদুঃখহন্ত্রীম্॥” – দেবীর ধ্যান মন্ত্র।
”অন্নপূর্ণে নমস্তুভ্যং নমস্তে পরমম্বিকে।
তচ্চারুচরণে ভক্তিং দেহি দীনদয়াময়ি॥
অন্নপূর্ণে সদাপূর্ণে শঙ্করপ্রাণবল্লভে।
জ্ঞানবৈরাগ্যসিদ্ধ্যর্থং ভিক্ষাং দেহি নমোহস্তুতে।”- দেবীর প্রণাম মন্ত্র।
সেই থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষজন এই দেবীর পূজা করে থাকেন। দেবী অন্নপূর্ণাকে সন্তুষ্ট করতে পারলে, গৃহে কোন দিন অন্নের অভাব হয় না।