বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের (Yogi Adityanath) জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে। করোনার দাপট আর লকডাউনের কারণে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ফেঁসে রয়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা। বাড়ি ফেরার জন্য বারবার কাতর আবেদন করেছে সরকারের কাছে। কেন্দ্র সরকার শ্রমিকদের জন্য স্পেশ্যাল ট্রেনের ব্যবস্থা করে থাকলেও, অনেকেই আবার পায়ে হেঁটে হাজার হাজার কিমি পারি দিয়ে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে থাকা শ্রমিকদের মধ্যে রাজ্য সরকারের প্রতি ক্ষোভ বেড়েই চলেছে। সবথেকে বেশি ক্ষোভ দেখা গিয়েছে এরাজ্যের শ্রমিকদের মধ্যে। কারণ অন্যান্য রাজ্য তাদের শ্রমিকদের ফিরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিলেও, বাংলা এই উদ্যোগে অনেক পিছিয়ে ছিল। তবে সম্প্রতি বাংলা থেকে ১০০ টির উপরে ট্রেন ব্যবস্থা করে রাজ্যের শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আরেকদিকে, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লক্ষ লক্ষ শ্রমিক উত্তর প্রদেশে ফিরেছে। আবার উত্তর প্রদেশেও বহু শ্রমিক আটকে রয়েছে অন্য রাজ্যের। উত্তর প্রদেশে আটকে পড়া বিহারের শ্রমিকদের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের জনপ্রিয়তা হুহু করে বেড়ে চলেছে।
তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, বিহার সরকার আমাদের জন্য কিছুই করছে না। কিন্তু যোগী সরকার তাদের সাধ্যমত সবরকম ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। বিহারের শ্রমিকদের মধ্যে যোগী আদিত্যনাথের এরকম জনপ্রয়তা একদিকে যেমন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের (Nitish Kumar) ঘুম কাড়ছে, উত্তর প্রদেশের যোগী বিরোধীদের চিন্তা আরও বাড়িয়ে তুলছে।
উত্তর প্রদেশ থেকে অনেক শ্রমিক বাড়ি ফিরেছে। আবার বিহারের অন্য জেলা থেকে আরেক জেলা দিয়ে যেতে গিয়ে উত্তর প্রদেশের সীমায় যেতে হচ্ছে শ্রমিকদের। আর সেই সময় রাস্তায় তাদের খাবার, জল এমনকি পরিবহণেরও সুবন্দোবস্ত করে দেওয়া হচ্ছে যোগী সরকারের তরফ থেকে।
উত্তর প্রদেশ থেকে বিহারে ফেরা শ্রমিকেরা জানায়, উত্তর প্রদেশের প্রতিটি থানার পুলিশকর্মীরা আমদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। জল, খাবার এমনকি গাড়ির ব্যবস্থাও করে দিচ্ছে। আমাদের রাজ্যের সরকার আমদের দিকে না তাকালেও যোগী সরকার আমাদের খেয়াল রেখেছে আর সেই জন্য মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং উত্তর প্রদেশ প্রশাসনকে অশেষ ধন্যবাদ জানাই।
আবার বিহারের শ্রমিকেরা এও অভিযোগ করছে যে, বিহার সরকার ভিন রাজ্যে আটকে পড়া শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে ১ হাজার করে টাকা পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও পৌঁছায় নি এক পয়সাও। এমনকি আমাদের বাড়ি ফেরানোর জন্য নুন্যতম ব্যবস্থা টুকুও করে দিচ্ছে না।
তবে পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে যোগী সরকারের এহেন জনপ্রিয়তায় সিঁদুরে মেঘ দেখা যাচ্ছে বিজেপি বিরোধী শিবিরে। কারণ যোগী আদিত্যনাথের জনপ্রিয়তা বাড়লে বিজেপির সমর্থন বৃদ্ধি পাবে। আর এমন হলে, করোনার পর উত্তর প্রদেশ এবং বিহারের নির্বাচনে বিজেপি একছত্র ভাবে আধিপত্য বিস্তার করবে।