‘চাল ডাল ত্রিপল ওষুধ নিয়ে আমফান মোকাবিলায় আমি তৈরি’ : বামফ্রন্টের প্রাক্তন মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ ” যত বড়ই দুর্যোগ আসুক না কেন আমি তৈরি আছি। রায়দিঘিতে আমার স্ত্রীর একটা স্কুল আছে। সেখানে সবার থাকায় ব্যবস্থা করেছি। দু হাজার ত্রিপল, একটা নৌকা, ১০০ কুইন্টাল চাল, তিন লক্ষ টাকার ওষুধের বন্দোবস্ত করেছি। এখানে যাঁদের মাটির ঘর আছে, তাদের সবাইকে সন্ধ্যা নামার আগে ওই স্কুলে চলে যেতে বলেছি।” বললেন বামফ্রন্টের প্রাক্তন মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় (Kanti Gangopadhyay)।

jhor 4

তিনি দুর্যোগের সময়ে বন্ধু। পাশে দাঁড়ায় সবার। তাই আয়লা, ফণী, বুলবুল- যে যখনই রায়দিঘির উপর তান্ডব করেছে, তখনই বুক দিয়ে তিনি রায়দিঘির মানুষদের আগলেছেন। কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় এবারেও প্রস্তুত আমফান মোকাবিলার জন্য। রাজ্যের দিকে ধেয়ে আসছে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় আমফান।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, আয়লার থেকেও এই ঘূর্ণিঝড় আরও শক্তিশালী। উপকূলবর্তী এলাকায় বিশেষ করে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় প্রবল প্রতাপ দেখাতে পারে আমফান। বঙ্গোপসাগরের সুপার সাইক্লোনের খবর পেয়েই আগাম প্রস্তুতি সেরে ফেলেছেন কান্তিবাবু।

IMG 20200519 WA0034

কান্তিবাবু বলেন, সরকারকে সহযোগিতার বার্তা দিয়ে বিকেলে তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিচ্ছেন। শুধু প্রাকৃতিক বিপর্যয় নয়, নেপালে কাজ করতে গিয়ে আইনি জটিলতায় পড়েন পশ্চিমবঙ্গের কয়েকজন। তাদের বন্দি করেছিল নেপাল সরকার। নয়াদিল্লি ও কাঠমান্ডুর মধ্যে কূটনৈতিক তরজা বাড়ছিল। যেহেতু নেপালে কমিউনিস্ট সরকার। তাই সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটি বিশেষ উদ্যোগ নেয় সেই পরিযায়ী ভারতীয় শ্রমিকদের ছাড়িয়ে আনতে। দলের নির্দেশ কাঠমান্ডু গিয়ে কূটনৈতিক ভূমিকা পালন করেন কান্তিবাবু। ছাড়িয়ে আনেন শ্রমিকদের। এই ঘটনায় দেশজুড়ে শোরগোল পড়েছিল।

kanti

আবার কয়েকমাস আগেও বুলবুল-এর সময় রাতে ঝড়-জল মাথায় করে, ধুতির কুঁচি হাঁটুর উপর তুলে টর্চ হাতে হাতে রায়দিঘির গ্রামে গ্রামে ঘুরে ত্রাণ ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন কান্তিবাবু। সবাইকে ডেকে নিয়ে গিয়ে ওই স্কুলে রেখেছিলেন। তবে সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে এ নতুন কিছু নয়। বাম আমলে সুন্দরবন মন্ত্রী হিসেবে ২০০৯ সালে আয়লার সময়েও গ্রামে গ্রামে ঘুরে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে উদ্ধার, ত্রাণের কাজ করেছিলেন। সেই কথা এখনও এলাকাবাসীর মুখে মুখে ঘোরে। যদিও ২০১১ সাল থেক্ ভোটের বাক্সে তার প্রতিফলন ঘটেনি। হেরেছেন একসময়ের বারে বারে মন্ত্রী ও বিধায়ক।

ko 1

অভিযোগ, তাঁকে হারানো তৃণমূল বিধায়কের দেখা মেলেনা বিপর্যয়ের সময়। তবে এসব কিছু ভাবতে চাননা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, “রাজনীতি মানেই কি ভোটে জেতা? আমি এব্যাপারে বিশ্বাসী নই৷ রাজনীতি মানে দেশপ্রেম৷ ক্ষমতায় থাকলাম কি থাকলাম না সেটা বিষয় নয়৷ ক্ষমতা থাকলে অনেক কাজ করা যায়৷

লোকের পাশে একটু থাকা, ভরসা জোগাতে কি অনেক টাকার দরকার হয়?” তিনি যে ভোট-পাখি নন, ফণী, বুলবুল-এর সময় তার প্রমাণ কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় দিয়েছেন৷ আমফান-এও সেই প্রমাণ মিলবে বলে দাবি তাঁর অনুগামীদের। কিন্তু রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অনেকেরই প্রশ্ন, ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত কি সেকথা মনে রাখবে সুন্দরবনবাসী? এর উত্তর বলবে আগামী নির্বাচনের ফলাফল।

সম্পর্কিত খবর