২৩ বছর আগে শহীদ হয়েছেন পিতা, ছেলে লেফটেন্যান্ট হওয়ায় মা বললেন- আমার তপস্যা সফল

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ মনের জোরই আসল শক্তি। এই শক্তি বলেই শহীদ পিতার মৃত্যুর ২৩ বছর পর ভারতীয় সেনাবাহিনীর (Indian Army) লেফটেন্যান্ট হলেন পুত্র মনোজ কুমার যাদব (Manoj Kumar Yadav)। দীর্ঘ তপস্যা এবং কর্মবলে শহীদ পিতার স্থানে পৌঁছাতে পেরে মা এবং ছেলে দুজনেই গর্বিত।

পিতার স্বপ্ন পূরণ
হিশার জিতপুরা গ্রামের বাসিন্দা মনোজ কুমার যাদব শনিবার দেরাদুনের ইন্ডিয়ান মিলিটারি একাডেমি থেকে কমিশনার লেফটেন্যান্ট পদে উত্তীর্ণ হন। পিতা শহীদ চন্দ্র সিংহের রেজিমেন্টে ৩১৭ ফিল্ড আর্টিলারিতে প্রথম পোস্ট লাভ করে পিতার স্বপ্নকে পূর্ণ করলেন তিনি। এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে দীর্ঘ ২৩ বছর সময় লেগেছে মনোজ কুমারের।

15 06 2020 manoj lieutenant 20393966

আনন্দিত মা এবং দিদি
ছোট থেকেই পিতার দেওয়া সাহস, সংগ্রাম এবং ধৈর্য্যের মন্ত্র অবলম্বন করেই আজ এই জায়গায় পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন মনোজ কুমার। পরিবারে মা সুশিলা দেবী এবং বড় বোন সীমা পাসিং আউট প্যারেডে উপস্থিত না থাকলেও, তারা ভিডিও মারফত ছেলের উন্নতি দেখে চোখে জল ভরে ওঠে। মনোজের মা জানালেন, আমার বহু বছরের স্বপ্ন সফল হল।

বায়ুসেনাতেও নির্বাচিত হন মনোজ
মনোজ জানিয়েছেন যে তাঁর সাফল্যের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব তাঁর মায়ের। যিনি সর্বদা তাকে সাহস করে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন। আর্মি স্কুল থেকে দ্বাদশ শ্রেণীতে পাস করার পরে মনোজ বিএ পলিটিকাল সায়েন্স নিয়ে পড়াশুনা করতে থাকেন। ২০১৩ সালে তিনি এনডিএতে নির্বাচিত হলেন। এর পরে ২০১৭ সালে বিমানবাহিনী এবং ২০১৮ সালে নৌবাহিনী থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি জানান, তাঁর এই সাফল্যের পিছনে তাঁর মায়ের অবদান অনস্বীকার্য। তাঁর মাই তাঁকে সবসময় সাহস যুগিয়ে গেছে। জীবনের যে কোন কঠিন পরিস্থিতিতেও সে হার মানেনি। চেন্নাইয়ের অফিসার্স ট্রেনিং একাডেমিতে নির্বাচিত হয়ে দেরাদুন আইএমএ-তে যোগদান করেন। বর্তমানে যোগ্যতা বলে তিনি লেফটেন্যান্ট হিসাবে নিযুক্ত হয়েছেন।

IMG 20190117 135438

আমার স্বপ্ন সফল হলঃ মা
১৯৯৭ সালের ৭ ই জুলাই মনোজের বাবা চন্দ্র সিং অপারেশন রানোর অংশ ছিলেন বলে জানালেন তাঁর মা। আগরতলায় পোস্টিং চলাকালীন আলফা জঙ্গিদের আক্রমণ করতে গিয়ে যুদ্ধে শহীদ হন। তখন মাত্র দেড় বছররে ছিল মনোজ। এরপর তিনি মনোজ এবং তাঁর দিদিকে হিশার আর্মি স্কুলে ভর্তি করিয়ে নিজেও বেসরকারী সংস্থায় শিক্ষকতা করে সংসার চালাতেন। প্রথম থেকেই তাঁর স্বপ্ন ছিল ছেলে বড় হয়ে আর্মি অফিসার হয়ে দেশের সেবা করবে। এবং বাস্তবে সেই স্বপ্ন পূর্ণতা পেতেই আনন্দাশ্রু বেরিয়ে এল সুশিলা দেবীর চোখে।

Avatar
Smita Hari

সম্পর্কিত খবর