বাংলাহান্ট ডেস্কঃ রামায়ণের (ramayan) সীতাহরণ কাহিনী শোনেনি এমন ভারতীয় খুব কমই আছে৷ কিন্তু জটায়ু কোথায় আহত হয়ে পড়েছিল সেই তথ্য খুব কম লোকই জানে৷ লোককথা অনুসারে জটায়ু আহত হয়ে পড়েছিল বেঙ্গালুরুর কাছে অনন্তনাগে। সেখানেই পরবর্তীকালে গড়ে ওঠে এই ‘লেপাক্ষী’ ( মতান্তরে লে পকসী) মন্দির। আর এই মন্দির ঘিরেই রয়েছে আশ্চর্য এক রহস্য।
পৃথিবীর প্রাচীনতম মহাকাব্য রামায়ণে বর্ণিত, রাবণ যখন সীতাকে উদ্ধার করে আকাশপথে লঙ্কায় ফিরে যেতে থাকেন তখন জটায়ু রাবণকে বাধা দেন। কিন্তু রাবণের সাথে শক্তিতে পেরে ওঠার ক্ষমতা জটায়ুর ছিল না। অচিরেই রাবনের তরোয়ালের আঘাতে মাটিতে পড়ে যায় জটায়ু। পরবর্তীতে জটায়ুই রামকে সীতার সন্ধান দিয়েছিলেন।
লোককথা অনুযায়ী, আহত জটায়ু মাটিতে অনন্তপুরমের এই মন্দিরে এসে পড়েন। রামের সাথে যখন তার দেখা হয়, তখন রাম তাকে বলেছিলেন ‘লেপক্ষী’। যার তেলুগু অর্থ, হে পাখি, উঠে দাঁড়াও। তারপর থেকেই এই মন্দিরটির নাম হয় ‘লেপক্ষী’৷
শুধু মিথ নয়, এই মন্দির ঘিরে রয়েছে অপূর্ব স্থাপত্যের নিদর্শন। তার সাথে অভেদ্য ইঞ্জিনিয়ারিং রহস্য। এই মন্দিরের ৭০ টি থামই ঝুলছে শুন্যে। মাটির সাথে তার কোনো রকম স্পর্শ নেই৷ মন্দিরের থামগুলির নীচ থেকে অনায়াসে গলে যায় কাপড় বা কাগজ। কিন্তু কিভাবে এই নির্মান সম্ভব সে রহস্য আজ পর্যন্ত ভেদ করতে পারেননি তাবড় তাবড় ইঞ্জিনিয়াররা।
পুরান মতে অগস্ত্য মুনির হাতে তৈরি হলেও ইতিহাস বলে এই মন্দির তৈরি হয় ১৫৩৮ সাল নাগাদ৷ সেই সময় এর নাম ছিল বীরভদ্র মন্দির। মন্দিরের অদূরে বিশাল নন্দী মূর্তিও নজর কাড়েন। যা ভারতের সবচেয়ে বড় নন্দীমূর্তি হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
অন্ধ্রপ্রদেশ বা কর্ণাটক ঘুরতে গেলে অবশ্যই ঘুরে আসুন এই মন্দিরে। পুরান, ইতিহাস, মিথ, স্থাপত্য আর ইঞ্জিনিয়ারিং ৫০০ বছর ধরে একসাথে হাত ধরাধরি করে দাঁড়িয়ে আছে এমন স্থান সত্যি বিরল।