বাংলা হান্ট ডেস্কঃ স্ত্রীর স্মরণে পাহাড় কেটে রাস্তা বানিয়েছিলেন বিহারের দশরথ মাঝি। আর এবার দশরথ মাঝির মতো ঝাড়খণ্ডের ধনঞ্জয় মাঝি (Dhananjay Manjhi) গর্ভবতী স্ত্রীর জন্য যা করল, সেটাও গোটা দেশ মনে রাখবে। ধনঞ্জয় তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে ১ হাজার ৩০০ কিমি স্কুটি চালায়। স্কুটিতে স্ত্রীকে বসিয়ে বাংলাদেশ বর্ডারের কাছে ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা জেলা থেকে তিনদিনে মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে পৌঁছায়।
ঝাড়খণ্ড থেকে তিনদিন স্কুটি চালিয়ে ধনঞ্জয় তাঁর গর্ভবতী স্ত্রী সোনি হেমব্রমকে ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্ট্রি এডুকেশন এর দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা দেওয়ানোর জন্য গোয়ালিয়র পৌঁছান। ধনঞ্জয় ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা জেলার গান্টা টোলার বাসিন্দা। আর সেখান থেকে বাংলাদেশের সীমান্ত মাত্র ১৫০ কিমি দূরে অবস্থিত। ধনঞ্জয় প্রায় ১৩০০ কিমি স্কুটি চালিয়ে ঝাড়খণ্ড, বিহার, উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন পাহাড়ি এবং সমতল এলাকা অতিক্রম করে মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে পৌঁছায়।
ধনঞ্জয় জানান, রাস্তার মাঝে বৃষ্টির কারণে আমরা একটি বড় গাছের নীচে আশ্রয় নিতে বাধ্য হই। বিহারের ভাগল্পুর থেকে যাওয়ার সময় বন্যার মুখোমুখিও হতে হয়েছিল ওনাকে। এছাড়াও বেহাল রাস্তায় গর্ভবতী স্ত্রীকে স্কুটিতে বসিয়ে সতর্কতার সাথে চলাচল করতে হয়। মুজফরপুরে একরাত লজে আর লখনউতে এক রাত টোল ট্যাক্স বেরিয়ারে কাটাতে হয় এই দম্পতিকে।
ধনঞ্জয় ক্যান্টিনে খাওয়ার বানানোর কাজ করে। এবং বিগত তিন মাস ধরে সে কাজ ছাড়া রয়েছে। স্কুটিতে পেট্রোল ভরার জন্য ধনঞ্জয় তাঁর স্ত্রীর গয়না বন্দক রাখে। ধনঞ্জয় নিজের দশম শ্রেণী পাশ করতে পারেনি ঠিকই, কিন্তু তাঁর স্ত্রীকে সে শিক্ষিকা বানাতে চায়। আর এই কারণেই এত দূরত্ব অতিক্রম করে দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা দেওয়াতে নিয়ে যায় ধনঞ্জয়।
ধনঞ্জয়ের স্ত্রী সোনি জানায়, ১৩০০ কিমির সফর অনেক সমস্যায় ভরা ছিল। অনেকবার পা শুন্য হয়ে যেত, কোমর ব্যাথা করত এমনকি পেটও ব্যাথা করত। মাঝ রাস্তায় বৃষ্টিও পড়েছে। কিন্তু আমার বরের সাহসের কারণে আমি হতাশ হয়ে পরিনি। সোনি জানায়, আমি আমার বরের জন্যই শিক্ষিকা হতে চাই।