অপরাধ কন্যা সন্তান হয়ে জন্মানো, তাই জন্মের সাথে সাথেই পুঁতে ফেলা হয় মাটির নীচে৷ সেখান থেকেই আজ বিশ্ববন্দিত নৃত্যশিল্পী পদ্মশ্রী সম্মানিত গুলাবো সাপেরা (padmashree gulabo sapera)। সাপুড়েদের নৃত্যকে তিনি নিয়ে গিয়েছেন বিশ্বের দরবারে জয় করেছেন সম্মান৷ তবে জন্মেই মৃত্যুকে মাত দেওয়া যাযাবর সাপুড়ের এই কন্যাসন্তান থেকে পদ্মশ্রী গুলাবো সাপেরা হওয়ার লড়াইটা কিন্তু সহজ ছিল না।
রাজস্থানের এক যাযাবর সাপুড়ে গোষ্ঠী কালবালিয়ার এক পরিবারে ১৯৭৩ সালে জন্ম নেন গুলাবো। যাযাবর এই গোষ্ঠীর তৎকালীন নিয়মে কন্যা সন্তান পালন নিষিদ্ধ ছিল৷ তাই জন্মের পর প্রথামাফিক গুলাবোকেও পুঁতে দেওয়া হয় মাটির নীচে। গুলাবোর বাবা সে সময় সেখানে ছিলেন না, সাত ঘন্টা পর গুলাবোর বাবা সেখানে এসে সমস্ত জানতে পারেন। গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গিয়ে কন্যাকে মাটি খু্ঁড়ে তোলেন। তখনও বেঁচে ছিলেন গুলাবো।
গুলাবোর বাবা তার নাম রাখেন ধনবতী। ১ বছর বয়সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে গুলাবো। সেবারও মৃত্যুকে হারিয়ে জিতে যান তিনি। সেখানে ডাক্তারের চেম্বারে থাকা এক গোলাপ ফুল দেখে সেই ফুলকে কন্যার শুভ মনে করেন তার বাবা। যার ফলে ধনবতী নাম বদলে রাখা হয় গুলাবো।
সাপুড়ের ঘরে জন্ম হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই সাপেদের সাথে মেলামেশা গুলাবোর। ৬ মাস বয়স থেকেই তাকে নিয়ে সাপের খেলা দেখাতে যেতেন তার বাবা। সাপ ও বাঁশির নড়াচড়া অনুকরণ করেই আজ বিশ্ববন্দিত নৃত্যশিল্পী তিনি। পুষ্করের মেলায় তাঁর নাচ চোখে পড়ে রাজস্থানের পর্যটন দপ্তরের দুই কর্মী তৃপ্তি পাণ্ডে এবং হনুমন্ত সিংহের। আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয় নি গুলাবোকে। এই মুহুর্তে দেশ বিদেশে অসংখ্য গুনমুগ্ধ ভক্ত রয়েছে তার। জিতেছেন অসংখ্যা সম্মান, সম্মানিত হয়েছেন পদ্মশ্রীতেও।