বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পাঞ্জাবের এক কৃষক নিজের মতো হাজার হাজার কৃষকদের সাথে বিগত কয়েকমাস ধরে প্রদর্শন করতে করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৃদ্ধা মা হীরাবেন মোদীকে একটি ভাবুক চিঠি লেখেন। ওই চিঠিতে কৃষক আবেদন করেছেন যে, তিনি যেন নিজের ছেলেকে কৃষি আইন ফেরত নেওয়ার জন্য বলেন। তিনি হীরাবেনকে অবগত করান যে, এই কৃষি আইনের ফলে গোটা দেশের কৃষকরা আন্দোলন করছে। কৃষকের আশা হল হীরাবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিজের মত বদলানোর জন্য মা হিসেবে নিজের সর্বশক্তির ব্যবহার করবেন।
পাঞ্জাবের ফিরোজপুর জেলার বাসিন্দা হরপ্রীত সিং হিন্দিতে হীরাবেনকে চিঠি লেখেন। তিনি প্রায় ১০০ বছর বয়সী হীরাবেন মোদীর কাছে লেখা চিঠিতে আবেগময় ভাবে কাতর আবেদন করেছেন। হরপ্রীত কঠিন পরিস্থিতিতেও যে কৃষকরা দিনের পর দিন ধরে কৃষি আইন রদ করার জন্য বিরধিতা করে চলেছেন সেটা জানিয়েছেন। এছাড়াও দেশের মানুষের খিদে মেটাতে কৃষকদের যোগদানের কথা আর সীমান্ত সুরক্ষিত রাখায় কৃষকদের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেছেন।
সিং লেখেন, ‘আমি এই চিঠিটি খুব কঠিন অবস্থায় পড়ে লিখছি। আপনি হয়ত জানেন দেশ আর বিশ্বের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার অন্নদাতারা তিনটি কালা কৃষি আইন রদ করার জন্য হাড় কাঁপানো ঠান্ডাতেও রাস্তায় বসতে বাধ্য হয়েছে। এমনকি এই আন্দোলনে ৯০ থেকে ৯৫ বছর বয়সী কৃষক এবং মহিলারাও অংশ নিয়েছেন। প্রবল শীতে কৃষকরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এমনকি অনেকে শহীদও হয়েছে। এটা সবার জন্যই চিন্তার বিষয়।”
হরপ্রীত সিং আরও লেখেন, ‘দিল্লীর সীমান্তে কৃষকদের এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কালা কৃষি আইন রদ করার দাবিতে হচ্ছে। এই কৃষি আইন আদানি, আম্বানি আর অন্যান্য শিল্পপতিদের ইশারায় করা হয়েছে।”
সিং সেই কৃষকদের মধ্যে এখন যে, ২০২০ এর সেপ্টেম্বর মাসে সংসদ দ্বারা তিনটি কৃষি আইন পাশ করানোর পর দিল্লী আর তাঁর আশেপাশের বর্ডারে ধরনায় বসেছেন। এই কয়েকমাসে কৃষক সংগঠনের সাথে সরকারের অনেকবার কথাবার্তাও চলেছে। কিন্তু সমস্যার কোনও সমাধান হয়নি। কৃষক আন্দোলনের কারণে ৭৫ এর বেশি কৃষকের প্রাণ চলে গিয়েছে।
সিংকে কয়েকদিন আগে শিমলায় বিনা অনুমতিতে করা প্রদর্শনস্থল থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এরপর ওনাকে জামিনে মুক্ত করা হয়। তিনি চিঠিতে লেখেন, ‘আমি এই চিঠি অনেক আশা নিয়ে লিখছি। আপনার ছেলে নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী। তিনি এই কৃষি আইন রদ করতে পারেন। আমার হিসেবে কেউ নিজের মা কে না করতে পারবে না।” সিং লেখেন, ‘গোটা দেশ আপনাকে ধন্যবাদ জানাবে। একমাত্র একজন মা’ই নিজের ছেলেকে আদেশ দিতে পারে।”