বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত ২৬ মার্চ বাংলাদেশ সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। দুদিনের বাংলাদেশ সফর ছিল ওনার। এরপর তিনি ২৭ তারিখ ঢাকা থেকে ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। বাংলাদেশে থাকাকালীন দুই দেশের মধ্যে আন্তরিকতা, পারস্পরিক সহযোগিতা, মৈত্রী এবং ব্যবসায়িক সম্পর্ক বাড়িয়ে তোলার উপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। গোটা বিশ্বে কোভিড মহামারী ছড়িয়ে পড়ার পর এটাই নরেন্দ্র মোদীর প্রথম বিদেশ সফর ছিল। ওনার সফর ঘিরে দুই দেশের মধ্যে ছিল চরম উন্মাদনাও।
আরেকদিকে, নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে গোটা বাংলাদেশ জুড়ে চরম অশান্তিও ছড়িয়ে পড়ে। নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফর স্থগিত করার জন্য বাংলাদেশে কট্টরপন্থী ইসলামিক সংগঠন এবং ছাত্র লীগ রাজধানী ঢাকায় হিংসাত্মক বিক্ষোভ দেখায়। তাঁদের এই হিংসাত্মক বিক্ষোভে একদিকে যেমন একাধিক আন্দোলনকারীর প্রাণ গেছে, তেমনই একাধিক পুলিশ কর্মীও আহত হয়েছেন।
আর এতকিছুর মধ্যে এক বাংলাদেশি ব্যক্তির ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় দারুণ গতিতে ভাইরাল হচ্ছে। ওই ব্যক্তি নিজেই ভিডিওতে আক্ষেপ প্রকাশ করে এটা বুঝিয়ে দিচ্ছেন যে, যারা নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করছে, তাঁরা কতটা স্বার্থপর এবং মানবতা বিরোধী। আই নিউজ বিড নামের একটি স্থানীয় বাংলাদেশির সংবাদমাধ্যমের সামনে ওই বাংলাদেশি ব্যক্তি যা বললেন, শুনে নিন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ২০০ টাকা কেজি পেঁয়াজ, ২০০ টাকা কেজি লঙ্কা, চাল-ডাল যাবতীয় সবকিছু ইন্ডিয়া থেকে আনতে হয়। এমনকি আমাদের গায়ের জামা-কাপড় পর্যন্ত ইন্ডিয়া থেকে আনতে হয়। তখন আমাদের কোনও অ্যালার্জি হয় না। আমার ভাই যখন অসুস্থ হয়, আমার পরিবারের কেউ যখন অসুস্থ হয় এমনকি আমি নিজে যখন অসুস্থ হই তখন কলকাতায় গিয়ে চিকিৎসা করাই। বাংলাদেশের ডাক্তারদের উপর আমাদের বিশ্বাস নেই। আর এমন মোদী বাংলাদেশে আসলেই সমস্যা হবে।”
ওই ব্যক্তি আরও বলেন, ‘আরে ভাই মোদী বাংলাদেশে আসলে সমস্যা কার? সমস্যাটা শুধু রাজনীতিবীদদের, আমাদের সাধারণ মানুষের কোনও সমস্যা নেই। আমরা মনে করি, ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক যত ভালো হবে এদেশের মানুষ তত ভালো থাকবে, এদেশ তত উন্নত হবে। ততই মানুষ খাওয়া, দাওয়া, চিকিৎসা সবকিছুর সুবিধা বেশি পাবে। আমার নিজের অভিজ্ঞতা, আমি আমার বোনকে চেন্নাই নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করিয়েছিক ক্যানসারের।”
ওই ব্যক্তি আরও বলেন, বাংলাদেশের ডাক্তাররা রোগীর কাছে আসে না। আর এই করোনার দিনে ভারতীয় ডাক্তাররা রোগীর গায়ে হাত দিয়ে দেখেন তাঁদের শরীর কেমন। এই দেশে আমরা বাস করি, আর ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলি।” ওই ব্যক্তি আরও বলেন, একটু পরেই আমি আমার বাবার ভারতীয় ভিসার জন্য অ্যাম্বেসিতে যাব। আমরা হলা দুমুখো সাপ। নিজের সুবিধা যেখানে, সেটাই খুঁজি।”
ওই ব্যক্তি আরও বলেন, ‘এটুকু একটা দেশ, এখানে হাঁটার জায়গা নেই আর আমরা অতবড় ভারতের সঙ্গে যারা বিশ্বের শক্তিশালী দেশের মধ্যে একটি তাঁদের সঙ্গে যাচ্ছি নিজেদের তুলনা করতে। এরপর তিনি বলেন, আমরা লেখাপড়ার জন্য ভারতে যাই, চিকিৎসার জন্য ভারতে যাই, ব্যবসার জন্য ভারতে যাই … শুধু মোদী আসলেই আমাদের অ্যালার্জি।” ওই ব্যক্তি নিজের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের সেসব মানুষের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন, যারা নিজেদের আর রাজনীতির স্বার্থে নরেন্দ্র মোদীর বিরোধিতায় বাংলাদেশ উত্তাল করে দিয়েছে।