বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ১০ এপ্রিল চতুর্থ দফার ভোটের দিন কোচবিহারের শীতলকুচিতে ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে প্রাণ হারায় ১৮ বছর বয়সী আনন্দ বর্মণ। এরপর বেলা দশটার দিকে শীতলকুচির ১২৬ নম্বর বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চার জনের প্রাণ যায়। এরপরই রাজ্য রাজনীতিতে তুলকালাম কাণ্ড শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে নির্বাচন কমিশন ৭২ ঘণ্টার জন্য কোচবিহারের ভূখণ্ডে বাইরের কোনও নেতার প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
কমিশনের নিষেধাজ্ঞার ৭২ ঘণ্টা পার হতেই আজ মাথাভাঙায় যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে গিয়ে তিনি শীতলকুচিতে নিহতদের স্মরনসভায় যোগ দেন এবং ভোট মেটার পর দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার পাশাপাশি নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দেন। এই স্মরনসভায় নিহত আনন্দ বর্মণের আত্মীয় বলে কাকে মঞ্চে তুলল তৃণমূল সেই নিয়েই এখন তুঙ্গে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
মঙ্গলবার নিহত আনন্দ বর্মণের দাদা এবং বাবা দুজনেই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, তাঁরা কেউ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন না। এমনকি তাঁরা তৃণমূল সরকার অথবা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে কোনও টাকা পয়সাও নেবেন না। তাঁরা স্পষ্ট জানিয়েছিলেন যে, ২-৩ জন ফোন করে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার কথা বলেছিলেন, আমি তাঁদের জানিয়ে দিয়েছি যে আমি দেখা করব না আর কোনও টাকাও নেব না। আমরা বিজেপি করি, আর বিজেপি করার অপরাধেই আমাদের ছেলের প্রাণ গেছে।
আজ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন নিহত আনন্দ বর্মণের দাদু এবং মামা। এখন বিজেপি প্রশ্ন তুলছে যে, আনন্দ বর্মণের বাবা-মা অথবা দাদাকে সভায় নিয়ে যেতে না পেরেই কি দাদু আর মামা কে ধরে নিয়ে এসেছে তৃণমূল?
বিজেপির নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল একটি শোকার্ত পরিবারকেও টুকরো টুকরো করার চেষ্টা করছে। মা-বাবাকে নিয়ে যেতে না পেরে দাদু-মামাকে নিয়ে টানাটানি করছে। আনন্দের গোটা পরিবার আমাদের সঙ্গে আছে জেনেই তৃণমূল এই কাজ করছে। এরকম রাজনীতি খুবই নিন্দাজনক।”
আরেকদিকে, তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ পাল্টা দাবি করে বলেছেন যে, ‘বিজেপি নেতারা জানেনই না যে আনন্দ বর্মণ বহু বছর ধরে তাঁর বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকত না। আনন্দ ছোটবেলা থেকেই মামার বাড়িতে মানুষ হয়েছে। ওঁর মামা আর দাদু মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এসে দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।”