বাংলাহান্ট ডেস্কঃ ভোটের বাংলায় ফের অমানবিক দৃশ্য সামনে এল। গেরুয়া শিবিরের (BJP) জয় শ্রীরাম এবং শাসকদলের (TMC) খেলা হবে স্লোগানের মধ্যে পড়ে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি এক নাবালক। জানা গিয়েছে, ওই নাবালককে জয় শ্রীরাম ধ্বনি দিতে বলেন একজন। কিন্তু তা না বলে সে বলে ফেলে খেলা হবে। সেখানেই ঘটল বিপত্তি। ছেলেটির গায়ে গরম জল ঢেলে দিল ওই ব্যক্তি। এমনকি সেখানেই থেমে না থেকে বেধড়ক মারধর করেন তাঁকে। ফলত গুরতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ওই নাবালক।
ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার (Nadia) শান্তিপুরের (Shantipur) ফুলিয়ায়। নাবালক ছেলেটিকে মারার ঘটনায় যিনি অভিযুক্ত,তিনি এলাকার একজন সক্রিয় বিজেপি কর্মী বলেও পরিচিত। নাবালককে জয় শ্রীরাম বলতে বললে, সে না বলায় তাঁর উপরে ক্ষেপে যান ওই বিজেপি কর্মী (BJP Worker)। রেগে গিয়ে গায়ে গরম জল ছিটিয়ে দেন এবং বেধড়ক মারধর করেন ওই ছেলেটিকে। ঘটনাস্থলেই ছেলেটি বমি করতে শুরু করে। তাঁকে প্রথমে ফুলিয়া স্বাস্থ্যকে কেন্দ্রে, পরে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়র রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে।
জানা গিয়েছে, ওই নাবালকের নাম মহাদেব। মা নেই তাঁর। বাবাও ঠিক মত কাজ করেন না, তাই নিজের খাবার দিনভোর ঘুরে ঘুরে নিজেই জোগাড় করে নাবালক মহাদেব। সেই মত সোমবার দুপুরে ফুলিয়াপাড়া এলাকায় একটি চায়ের দোকানে যায় নাবালক মহাদেব। তখনই চায়ের দোকানদার মহাদেব প্রামাণিক ওই নাবালককে জয় শ্রীরাম বলতে বলে, কিন্তু সে না বলায় এই কাণ্ড ঘটিয়ে বসেন তিনি। ইতিমধ্যেই পলাতক ওই দোকানদার। তবে তাঁর স্ত্রী মিঠু প্রামাণিক ছেলেটিকে মারার ঘটনাটি স্বীকার করে নিয়েছেন।
তিনি জানান, ‘ছেলেটি এসে তাঁর স্বামীকে প্রথমে খেলা হবে বলতে বলে, স্বামী রেগে গিয়ে তাঁর গায়ে জল ঢেলে দেন। তখন ছেলেটি দোকানের দিকে ঢিল মেরে পালাতে চাইলে, আমার স্বামীকে তাঁকে তাড়িয়ে ধরে একটা চড় মারে।’তারপর তিনি স্বীকার করেন তাঁর স্বামীর এহেন চড় মারা উচিত হয়নি। উল্লেখ্য, এই মিঠু প্রামানিক এলাকায় বিজেপির মহিলা মোর্চার মন্ডল সভাপতি। পূর্বের বিধানসভা নির্বাচনে তিনি প্রার্থীও হয়েছিলেন। প্রসঙ্গত, ঘটনা ঘিরে তুমুল চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে গোটা এলাকায়। স্থানীয় এবং তৃণমূলের কর্মী সরমর্থকরা মিলে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে। তাঁরা অবিলম্বে ওই চায়ের দোকানদার মহাদেব প্রামানিককে গ্রেপ্তারির দাবি তোলে।