বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হতেই রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছে রক্তের হোলি খেলা। একের পর এক কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন দুই শিবিরেই। বিজেপি কর্মীদের ওপর এই অত্যাচারের কথা মাথায় রেখেই আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেয়নি বিজেপি নেতৃত্ব। আমন্ত্রণ পেয়েও তা রক্ষা করেননি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বুধবার হেস্টিংসে মঞ্চ বেঁধে এই অভিযোগ সামনে রেখে প্রতিবাদেও যোগ দেন রাজ্য বিজেপির নেতৃবৃন্দ। বুধবার মমতার পাশাপাশি দিলীপ ঘোষের তত্ত্বাবধানে শপথ গ্রহণ করেন রাজ্য বিজেপির বিধায়করাও। সেখানে জয়ী প্রার্থীদের শপথ বাক্য পাঠ করতে সহায়তা করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডাও। শপথ গ্রহণের পর এদিন হেস্টিংস থেকেই প্রতিবাদ অবস্থানে যোগ দেয় বিজেপি।
রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা এবং একের পর এক বিজেপি কর্মী খুনের ঘটনাকে মুখ্য করে এদিন অবস্থান করেন তারা। এই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীও। এদিন মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিতে দ্বিধা করেননি তিনি। তিনি বলেন, এরপর শুভেন্দু নিজের প্রসঙ্গে বলেন, “আমি ব্যক্তিগত ভাবে খুবই সুখী। যে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই হেরেছেন, তিনি শপথ নিচ্ছেন! হারা মুখ্যমন্ত্রী শপথ নিচ্ছেন। ওটা যে ‘প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি’, তা তো আগেই বলেছি। আর কোনো মুখ্যমন্ত্রী পায়নি তো! বিরোধী দলের যাঁরা আজ শপথ বয়কট করলেন তাঁদের সবাইকে শ্রদ্ধা জানাই।”
শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথগ্রহণ বিষয়ে নয়, নন্দীগ্রামের ভোট গণনা এবং তা পুনর্গণনার আর্জি নিয়েও এদিন মুখ খোলেন শুভেন্দু। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুনর্গণনার চাইলেও তা মেনে নেয়নি নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে এদিন শুভেন্দু বলেন, “নির্বাচন কমিশন সেদিনই পুনর্গণনার আর্জি বাতিল করেছে। যে কোনো দলই পুনর্গণনার দাবি তুলতে পারে। পুনর্গণনার পদ্ধতি মেনে যে কোনো দলের প্রাথী কোর্টে পিটিশন করতে পারেন। রিটার্নিং অফিসারের কিছু বলার থাকলে তিনি কমিশনকে বলবেন।”
সাথে সাথে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছেন শুভেন্দু। তৃণমূলের ‘খেলা হবে’ স্লোগান নিয়ে এর আগেও বারবার মুখ খুলেছে বিজেপি। তাদের মতে খেলা হবে আসলে হিংসারই ইংগিত। এদিনে সেই পুরনো কথা টেনে এনে তিনি বলেন, “নন্দীগ্রামের হারা তৃণমূল প্রাথী নিজেই হিংসা ছড়াচ্ছেন। ‘খেলা হবে’ বলেছিল। মহিলাদের উপর অত্যাচার করে আসল খেলা দেখাচ্ছে। সংখ্যা শেষ কথা বলে না। আমি বুদ্ধবাবুর সময়েও দেখেছিলাম, ৬ মাসের মধ্যে কী হয়েছিল!”
সবমিলিয়ে ভোট মিটলেও দুই পক্ষের তাপ উত্তাপ যতটুকু কমেনি তা আরেকবার আজ বুঝিয়ে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী।