বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত বছর আমফানের তাণ্ডবে রীতিমতো বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিল বাংলা। ঝড়ের দাপটে গৃহহীন হয়ে পড়েছিলেন বহু মানুষ। মৃত্যু তেমন না ঘটলেও অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি ছিল রীতিমতো ভয়াবহ। এবারও একদিকে যেমন করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের বিপর্যস্ত মানুষ তখনই ফের ভারতকে রীতিমত ভয় পাওয়াচ্ছে ঘূর্ণিঝড় তাউকটে।
বাংলায় তেমন ভয়ঙ্কর প্রভাব না ফেললেও আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস ছিল, গুজরাট, মুম্বাই এবং গোয়ার ক্ষেত্রে রীতিমতো ক্ষতিসাধন করতে সক্ষম এই ঘূর্ণিঝড়। ইতিমধ্যেই সেই পূর্বাভাসকে সত্যি করে গোয়ার উপকূলে আছড়ে পড়েছে তাউকটে। ইন্ডিয়ান মেতেওরোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট তথা আইএমডি জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই যেমন শুরু হয়েছে বিধ্বংসী ঝড় এবং বৃষ্টি তা চলতে থাকবে সারাদিনই। আজ বিকেল নাগাদ এই ঝড়ের কেন্দ্রবিন্দু উত্তরদাতা উত্তর-পশ্চিম গোয়া। ইতিমধ্যেই আরব সাগরে যথেষ্ট শক্তি বাড়ি এসে তাউকটে। আবহাওয়া দপ্তরের মতে, ক্রমশ উত্তর থেকে আরো উত্তর-পশ্চিম দিকে সরে যাবে এই ঝঞ্জা।
এই দুরন্ত ঘূর্ণি ঝড়ের যথেষ্ট প্রভাব পড়েছে কর্নাটকেও। কর্ণাটক ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির তরফে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় তিনটি উপকূলীয় জেলা সহ মোট ছটি জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত পরিলক্ষিত হয়েছে। যার ফলে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৭৩টি গ্রামে। ইতিমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন চারজন মানুষ। কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা জানিয়েছেন, তারা এই ঘূর্ণিঝড়ের গতি ও উপকূলীয় অঞ্চল গুলির পরিস্থিতির উপর সর্বদা নজর রাখছেন। আইএমডি তরফে জানানো হয়েছে, গোয়ার উপকূলীয় অঞ্চলে আজ সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ আছড়ে পারে এই ঝড়।
Cyclone Tauktae hit coastal parts of Goa. Visuals from Panaji pic.twitter.com/qPGI0CnUjS
— ANI (@ANI) May 16, 2021
ক্ষয় ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে কেরলেও। শনিবার রাতেই মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন ট্যুইট করে জানিয়েছেন ইতিমধ্যেই কেরালায় ১৭ টি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে, সরিয়ে আনা হয়েছে প্রায় ৫০০ পরিবারকে। রাজ্যের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে শনিবার থেকেই চলছে বৃষ্টিপাত। বিভিন্ন জায়গায় জমে গিয়েছে হাঁটু অবধি জল। আগামী ১২ ঘন্টায় আরো অনেক বেশি শক্তি বাড়াতে চলেছে ঘূর্ণিঝড় তাউকটে। বৃষ্টির কারণে ইতিমধ্যেই বহু বাড়িঘর ভেঙে পড়েছে গোয়ায়। বেড়েছে সমুদ্রের জলোচ্ছাসের পরিমানও। চূড়ান্ত সর্তকতা জারি করা হয়েছে মহারাষ্ট্রেও।
শেষ কয়েকদিন ধরেই কেরলে জারি করা হয়েছে লাল সর্তকতা। এবার যথেষ্ট ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে গুজরাট এবং মহারাষ্ট্রেও। ইতিমধ্যেই মুম্বাই থেকে অনেক করোনা রোগীকে সরিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে। দেশের বর্তমান কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এই ঝড়কে সামলানো রীতিমতো চ্যালেঞ্জিং কাজ যেকোনো সরকারের পক্ষেই।
গতবছর কোভিডের মধ্যে আমফানের প্রভাব সামলাতে গিয়ে যথেষ্ট বেকায়দায় পড়তে হয়েছিল মমতা সরকারকে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, পরিস্থিতি আরও বেহাল হতে পারে কেরল, কর্ণাটক এবং মহারাষ্ট্রে। এই মুহূর্তে করোনা কারণে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে মুম্বাই। এখন এই শহরকে সামলাতে গিয়ে ব্যাহত হতে পারে টিকাকরণ, এমনকি চিকিৎসা ব্যবস্থাও। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শনিবারই এই বিপর্যয়ে সমস্ত রাজ্য সরকারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন তিনি।