বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যে ক্রমাগত আরো ভয়াবহ হয়ে উঠছে করোনা পরিস্থিতি। গত ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় সাড়ে ঊনিশ হাজার মানুষ। গত কয়েক দিনের তুলনায় সংখ্যাটা কিছুটা কমলেও উদ্বেগ এখনও রয়েছে যথেষ্ট। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গতকালই কোভিডের সংক্রমণের শৃংখল ভাঙতে এ মাসের ৩০ তারিখ অব্দি সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করেছে রাজ্য। সেই লকডাউনের প্রথম দিন আজ। আজ থেকেই কেবলমাত্র সকাল ৭ টা থেকে ১০ টা অবধি খোলা থাকবে বাজারও ছোটখাটো দোকানপাট। ব্যাংক পরিষেবার ক্ষেত্রে গতবারের তুলনায় এবার আরো বেশি কড়াকড়ি করেছে রাজ্য সরকার। কেবলমাত্র সকাল দশটা থেকে বেলা দুটো অবধিই পরিষেবা দিতে পারবে ব্যাঙ্কগুলি। যদিও ২৪ ঘন্টাই এটিএম খোলা রাখার কথা বলা হয়েছে। মিষ্টির দোকানের ক্ষেত্রে ছাড় মিলেছে দশটা থেকে পাঁচটা অবধি। তবে সমস্ত ক্ষেত্রেই বন্ধ পরিবহন। জরুরী ট্যাক্সি ছাড়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে মেট্রো, বাস, ফেরি প্রভৃতি সমস্ত ধরনের পরিবহনই।
৫ মে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পরেই করোনার বিরুদ্ধে লড়াইকে প্রথম কাজ বলে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেদিনই সংক্রমণ রোধে একাধিক সিদ্ধান্ত নেন তিনি। বন্ধ করে দেওয়া হয় রেল পরিষেবা। এবার পরবর্তী পরামর্শ আসা অবধি আগের নিয়মই চালু থাকবে জানানো পূর্ব রেল। অর্থাৎ আজ থেকে আগামী ১৫ দিনের জন্য বন্ধ থাকবে সমস্ত লোকাল ট্রেন পরিষেবাই।
তবে মেল, এক্সপ্রেস, পার্সেল ট্রেন, মালগাড়ি স্পেশাল ট্রেন পরিষেবা আগের মতই বজায় থাকছে বলে জানানো হয়েছে পূর্ব রেলের তরফে। তবে শহরতলী ও ইএসইউ ট্রেন পরিষেবাও পরবর্তী পরামর্শ অবধি বন্ধ রাখা হবে। ইতিমধ্যেই রাজ্যে মোট সংক্রমণের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১১ লক্ষেরও বেশি। গত কয়েকদিনে প্রতিদিনই মৃত্যুর মুখে ঢুকে পড়েছেন শতাধিক মানুষ। এক্ষেত্রে একদিকে যেমন জরুরি কোভিড বিধি মেনে চলা তেমনি অন্যদিকে জরুরী ছিল বেশ কিছু দিনের লকডাউন।
সেই কথা মাথায় রেখেই গতকাল সমস্ত স্কুল-কলেজ ও সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। উৎপাদন ছাড়া বন্ধ রাখা হয়েছে কলকারখানাও। জরুরী পরিষেবা ছাড়া আগের মতোই বন্ধ থাকবে স্পোর্টস কমপ্লেক্স, সিনেমা হল, রেস্তোরাঁ, শপিং মল এবং জিম। তবে এই সময় মানুষের অনলাইন নির্ভরতার কথা মাথায় রেখে ছাড় দেওয়া হয়েছে ই-কমার্স সংস্থাগুলিকে। অর্থনীতি যাতে একেবারে ধ্বসে না পরে সেই সূত্র ধরে ছাড় দেওয়া হয়েছে চা বাগান এবং জুটমিল গুলিকেও। চা বাগানের ক্ষেত্রে ৫০% কর্মী নিয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ৩০% কর্মী নিয়ে কাজ করার অনুমতি পেয়েছে জুটমিলগুলিও। তবে এবারের লকডাউনেও সম্পূর্ণ ছাড় পাচ্ছেন ওষুধের দোকান এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত সরঞ্জামের দোকানগুলি।