যেই কারণে চার অভিযুক্তের জামিনে স্থগিতাদেশ জারি করে হেফাজতে পাঠাল হাইকোর্ট

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ তৃণমূলের তিন বিধায়ক-মন্ত্রী এবং প্রাক্তন তৃণমূল নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পর পরই নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে ছুটে যান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে গিয়ে তিনি সিবিআই আধিকারিকদের কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘ওদের গ্রেফতার করা হয়েছে, এবার আমাকেও গ্রেফতার করুন। নাহলে আমি সিবিআই দফতর ছাড়ব না।” তবে দীর্ঘ ৬ ঘণ্টা সংগ্রাম করার পর অবশেষে তিনি সিবিআই দফতর ছাড়েন।

mamata 145

মুখ্যমন্ত্রী যখন সিবিআই দফতরে কার্যত ধরনায় বসে গিয়েছিলেন, তখন তৃণমূলের হাজার হাজার সমর্থক নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরের বাইরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে ধ্বস্তাধ্বস্তিতে জড়িয়ে পড়ে। বাহিনীর উপর করা হয় ইটবৃষ্টি। এরপর রাজভবনের বাইরেও তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। গেট ভেঙে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন তাঁরা।

TMC Supporter cbi

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজাম প্যালেসে যখন ধরনায় ছিলেন, তখনই চার অভিযুক্তকে নিয়ে নিম্ন আদালতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে শুনানি চলছিল। শুনানি শেষ হওয়ার পরই নিজম প্যালেস থেকে বেরিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী। সিবিআই দফতর থেকে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখন আর কিছু বলব না। যা বলার আদালতেই বলব।” মুখ্যমন্ত্রী সিবিআই দফতর ছাড়ার কয়েক ঘণ্টা পর আদালতের রায় আসে। সেই রায়ে চার অভিযুক্তের জামিনের নির্দেশ দেওয়া হয়।

narada 630x420 1

অভিযুক্তরা জামিনে মুক্ত হওয়ার পর আনন্দে ফেটে পড়ে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা। যদিও, সিবিআই-এর মাথায় তখন অন্যকিছু পরিকল্পনা চলছিল। তাঁরা প্রথম থেকেই অভিযুক্তদের হেফাজতে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। অভিযুক্তরা জামিন পাওয়ার পর সিবিআই হাইকোর্টের দরজায় কড়া নাড়ে। সিবিআই-এর যুক্তি শোনার পর হাইকোর্ট চার অভিযুক্তকে আগামী বুধবার পর্যন্ত জেল হেফাজতে থাকার নির্দেশ জারি করে।

centre sends back names for 2 calcutta high court judges

হাইকোর্টে সিবিআই যুক্তি দিয়ে বলেছিল, ‘নেতারা গ্রেফতার হওয়ার পর স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী সিবিআই দফতরে এসে ধরনা দেন। এমনকি ২-৩ হাজার সমর্থক নিয়ে আদালতে হাজিয়ে হয়েছিলেন রাজ্যের আইনমন্ত্রী।” সিবিআই-এর এই যুক্তি শুনে কলকাতা হাইকোর্ট অভিযুক্তদের অন্তর্বর্তী জামিনে স্থগিতাদেশ জারি করে। হাইকোর্টে নির্দেশের পর রাতের বেলায় নিজাম প্যালেসের পিছনের দরজা দিয়ে প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যাওয়া হয় অভিযুক্তদের।

Presidency Jail

প্রভাব খাটিয়ে অভিযুক্তদের শাস্তি মুকুব করার প্রচেষ্টার যুক্তি মেনে নিয়েছে হাইকোর্ট। আদালত বিতর্কের দোষগুণ বিচার করার বদলে চাপ সৃষ্টি করে আইনের উপর সাধারণ মানুষের ভরসা তুলে দেওয়ার যুক্তি মেনে নিয়েছে। সিবিআইয়ের যুক্তি মেনে নেওয়ার পর নিম্ন আদালতের রায়ে স্থগিতাদেশ জারি করে অভিযুক্তদের বুধবার পর্যন্ত বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।


Koushik Dutta

সম্পর্কিত খবর