বসে বসে বেতন পছন্দ না, নিজের টাকাতে করোনা রোগীদের ওষুধ পৌঁছে দিচ্ছেন শিক্ষক শ্যামল জানা

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ অন্ধকারে পথ হারিয়ে ফেললে যিনি হাত ধরে আবার আলোর পথে এগিয়ে দেন তিনিই তো শিক্ষক। এখন মহামারীর অন্ধকারে নাজেহাল হয়ে একটুখানি আলোর আশা খুঁজছে দেশ তথা রাজ্যবাসী। গত ২৪ ঘণ্টাতেও আমাদের রাজ্যে আক্রান্ত হয়েছেন সংক্রমিত হয়েছেন ১৯,০০৩ জন মানুষ। লকডাউনের জেরে নতুন সংক্রমণ কিছুটা কমলেও গত ২৪ ঘন্টাতেও মৃত্যু হয়েছে ১৪৭ জনের। একদিকে যেমন রয়েছে এই ভয়ঙ্কর মহামারীর সংকট, তেমনি অন্যদিকে ফের ভাঙ্গন ধরেছে অর্থনীতিতেও। লকডাউনের জেরে ফের একবার কাহিল অবস্থায় মানুষ।

এই অবস্থাতেই মানুষের পাশে এগিয়ে এলেন পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির কুলাই পদিমা নিম্ন বুনিয়াদী বিদ্যালয়ের শিক্ষক শ্যামল জানা। কোভিডের জেরে এখনও বন্ধ স্কুল। প্রিয় ছাত্রছাত্রীদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না শিক্ষক-শিক্ষিকারা। বাড়ি বসে এভাবে মাসের-পর-মাস বেতন নিতে ভালো লাগেনা শ্যামল বাবুর। আর সেই কারণেই এবার মানুষের পাশে এগিয়ে এলেন তিনি। পরিবেশ প্রেমী বলে এমনিতেই পাড়ায় পরিচিত শ্যামল জানা। সময় পেলেই চলে যান কাঁথির সমুদ্রের ধারে, নিজের হাতেই পরিষ্কার করেন বেলাভূমিতে পরে থাকা প্লাস্টিক বর্জ্য। এছাড়া রক্তদান, গরীব ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে দাঁড়ানো এসব তো নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। এমন মানুষকে আটকে রাখা যায় কোভিডের এই মহামারীর কালে?

Shyamal Jana

ইতিমধ্যেই কাঁথি শহর ও শহর লাগোয়া বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন আসা শুরু হয়েছে। ঠিকানা জেনে নিয়ে শ্যামলবাবুও বাড়িয়ে দিচ্ছেন সাহায্যের হাত। নিজের টাকা দিয়েই কাউকে কিনে দিচ্ছেন ওষুধ। কাউকে পৌঁছে দিচ্ছেন খাবার দাবার। ভিনরাজ্যে কিম্বা কলকাতায় ডাক্তার দেখাতে এলেও সঙ্গে করে বাচ্ছাদের জন্য পেন, পেনসিল, খাতাপত্র আনেন তিনি। সাথে থাকে খাবারের প্যাকেটও। এখনও কোভিডের পরবর্তী শারীরিক অসুস্থাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা সকলের জন্য হাজির তিনি। এবিষয়ে তার সাহায্যে সর্বক্ষন রয়েছেন স্ত্রী মনিকা। ইতিমধ্যে কাঁথির মহকুমা শাসক ও মহকুমা পুলিশ আধিকারিকদের তরফে কোভিড যোদ্ধা সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে তাকে। একদিকে যখন একটু একটু শেষ হতে বসেছে সামাজিকতা। আমরা ভুলতে বসেছি, সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমারা পরের তরে — এই নীতিশিক্ষা। তখনই আমাদের পথ দেখান শ্যামলবাবুর মত শিক্ষকরা।


Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর