বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নির্বাচন-পরবর্তী হিংসাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই যথেষ্ট জল ঘোলা হয়েছে বাংলায়। তৃণমূল কংগ্রেস তৃতীয়বার ক্ষমতায় ফেরার পর থেকেই বিক্ষিপ্ত অশান্তির ছবি ধরা পড়ে রাজ্যের বিভিন্ন অংশে। এর আগেই এ ধরনের সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় কুড়ি জন রাজনৈতিক কর্মী। একাধিকবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরও। এমনকি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কোচবিহার, নন্দীগ্রাম এবং আসামের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরেও বেড়িয়েছেন তিনি। কিন্তু অশান্তির ছবিটা যেন শেষ হতে চাইছে না কিছুতেই। একদিকে যখন নারোদা খেতে তিন হেভিওয়েট নেতা মন্ত্রীর আটক নিয়ে রীতিমতো অস্বস্তিতে তৃণমূল। তখনই অন্যদিকে ফের একবার বিজেপির হাতে আক্রান্ত হলেন তৃণমূল কর্মীরা। অবশ্য পুরোটাই রয়েছে অভিযোগ স্তরে।
গুলিবিদ্ধ তৃণমূল কর্মীঃ
ঘটনাটি ঘটে পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর ২ নম্বর ব্লকের এক্তারপুর এলাকায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায়, তৃণমূলের কার্যালয় লক্ষ্য করে আচমকাই বোমাবাজি শুরু করে কয়েকজন দুষ্কৃতী। সে সময় কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন কয়েকজন তৃণমূল কর্মী। পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন দ্বারকেশ দাস নামের এক কর্মীও। অভিযোগ, দরজার সামনে ওই কর্মীকে বেরিয়ে আসতে দেখেই গুলি ছোঁড়ে দুষ্কৃতীরা। কোমরে গুলি লাগায় ভয়াবহ ভাবে জখম হয়ে পড়েন তিনি। এর পরেই অবশ্য এলাকা ছেড়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। প্রথমে মুগবেড়িয়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও পরিস্থিতি সংকটজনক হওয়ায় দ্বারকেশ দাসকে ভর্তি করা হয় তমলুক জেলা হাসপাতালে। কিন্তু শারীরিক পরিস্থিতির কিছুই উন্নতি হয়নি, ফর্মত ভোররাতে তাকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনায় অভিযোগের তীর পুরোপুরি স্থানীয় বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে।
তৃণমূলের অভিযোগ বিজেপির দিকেঃ
ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিতে গিয়ে তৃণমূল জেলা সভাপতি শশাঙ্ক কুমার জানা জানান, ‘‘এদিন সন্ধ্যেবেলায় স্থানীয় তৃণমূলের পার্টি অফিসের ভেতর বসে চা খাচ্ছিলেন গুটি কয়েক তৃণমূল কর্মী। সেই সময় হঠাৎই মোটর বাইকে চড়ে একদল দুষ্কৃতী সটান পার্টি অফিসের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে গুলি চালিয়ে দেয়। লুটিয়ে পড়েন দ্বারকেশ। তৃণমূল কর্মীরা দুষ্কৃতীদের তাড়া করলে তারা দ্রুত এলাকা ছেড়ে পালায়।’’
তাদের মতে, তৃণমূলের বিপুল জয় মেনে নিতে পারছেন না বিজেপি কর্মীরা। তাই নানাভাবে অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টি করার চক্রান্ত করে চলেছেন।
অভিযোগ অস্বীকার বিজেপিরঃ
অবশ্য পুরো ঘটনাই অস্বীকার করেছে বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অনুপ মাঝি সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, বিজেপি খুনের রাজনীতি করে না। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই ঘটনা। বরং উল্টে তৃণমূলকেই কাঠগড়ায় তোলেন এই বিজেপি নেতা। তিনি বলেন, “গোটা জেলাতেই ভোট-পরবর্তী হিংসায় বিজেপির বহু মানুষ ক্ষতির মুখে পড়েছেন।” একাধিক বিজেপি কর্মীর বাড়িতে ও দোকানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।