বাংলা হান্ট ডেস্কঃ করোনায় রীতিমতো ভেঙে পড়েছে দেশ। একদিকে যেমন ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো, তেমনি অন্যদিকে তথৈবচ অবস্থা অর্থনীতিরও। একই পরিস্থিতি ত্রিপুরাতেও। লকডাউনের ফলে নতুন করে কাজ হারিয়েছেন বহু মানুষ। অনেক মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত বর্গের মানুষই এখন নেমে এসেছেন নিম্নবিত্তের পর্যায়ে। এই মুহূর্তে দরকার মানুষের হাতে সরাসরি টাকা পৌঁছে দেওয়া। যাতে বাজারে চাহিদা বজায় থাকে এবং তৈরি করা দরকার কর্মসংস্থানও। সেই লক্ষ্যেই এবার বড় সিদ্ধান্ত নিল ত্রিপুরা সরকার।
যদিও কার্ফুর ফলে ত্রিপুরায় সংক্রমণ অনেকটাই কম। গত ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৩৩ জন। নতুন করে মৃত্যু হয়েছে মাত্র ৬ জনের। কিন্তু করোনার শৃংখলকে ভাঙতে সমর্থ হলেও অন্যদিকে কার্ফুর ফলে প্রভূত ক্ষতি সহ্য করতে হচ্ছে ত্রিপুরা বাসীকে। সেই সূত্র ধরেই এবার তাদের জন্য ৫৭৯ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এর মাধ্যমে সরাসরি ১০০০ টাকা আর্থিক সহায়তা পাবে প্রায় ৭০ লক্ষ পরিবার। ব্যাঙ্ক ট্রান্সফারের মাধ্যমে সরাসরি এই সাহায্য পৌঁছাবে চাহিদার ভিত্তিতে। এর মাধ্যমে সরকারের খরচ হতে চলেছে প্রায় ৭০ কোটি টাকা। এছাড়া দরিদ্র পরিবারগুলিকে বিনামূল্যে ফুড প্যাকেট দেওয়া হবে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। যাতে খরচ হতে চলেছে ৭২ কোটি টাকা মত।
এই মুহূর্তে করোনার জেরে কাজ হারিয়েছেন বহু মানুষ। আর সেই কারণেই কর্ম দিবস সৃষ্টিতে এবার বিশেষ লক্ষ্য দিল বিপ্লব দেবের সরকার। এমজিএনআর ইজিএর মাধ্যমে নতুন করে কর্মদিবস তৈরীর জন্য প্রায় ৩৩২ কোটি টাকা খরচ করবে তারা। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব জানান,“করোনা পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ নানা সমস্যায় পড়েছেন। সেই কারণেই এমজিএনআরইজিএ প্রকল্পের অধীনে রাজ্যে ৩৩২ কোটির কর্ম সংস্থানের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এছাড়াও সাত লক্ষ পরিবারকে এককালীন এক হাজার টাকা ও রেশন দেওয়া হবে।”
এছাড়াও শহরাঞ্চলের টুয়েপের কাজের জন্য ২৫ কোটি টাকা খরচ করার কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এর সাথে সাথে ত্রিপুরার আদিবাসী অধ্যুষিত স্বশাসিত জেলা পরিষদ খেরঙ্গবার একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে উন্নয়নের জন্য ২৮ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছিল রাজ্য সরকারের কাছে। এদিন সেই হাসপাতালের আরজিও মঞ্জুর করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। তিনি জানান দেশের একটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল তৈরি করার জন্য ৩০ কোটি টাকা দেবে রাজ্য সরকার। এই মুহূর্তে যেকোনো সরকারেরই মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত অর্থনীতির ভাঙ্গন রোধ করা। সেই লক্ষ্যে ত্রিপুরাতে অন্তত কিছুটা অগ্রসর হলো এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। রাজ্য সরকারের তরফে আরো জানানো হয়েছে চিকিৎসার বিকেন্দ্রীকৃত ব্যবস্থা ও অক্সিজেন প্লান্ট নির্মাণেও প্রয়োজনীয় টাকা খরচ করবে তারা।