বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মোদি সরকারের দ্বিতীয় কার্যকালে উঠে এসেছে যথেষ্ট প্রশ্ন। বিশেষত করোনা কালে দেশকে যেভাবে সামলেছে মোদি সরকার তা নিয়ে শুধু জাতীয় সংবাদ মাধ্যমই নয় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমেও হয়েছে যথেষ্ট সমালোচনা। এছাড়া বেড়েছে দেশের বেকারত্ব, লকডাউনের ফলে বহু মানুষ ও পরিবার চলে গিয়েছেন দারিদ্র্যসীমার নিচে। শুধু তাই নয়, ভেঙে পড়েছে অর্থনীতিও। গত বছর এই প্রথমবার ভারতের জিডিপি এক ধাক্কায় অনেকটাই নিচে নেমে গিয়েছে। এছাড়া মূল্যবৃদ্ধি তো রয়েছেই।
সব মিলিয়ে সরকার এখন যথেষ্ট নাজেহাল। এমতাবস্থায়, কতটা সরকারবিরোধী হাওয়া তৈরি হচ্ছে জনতার মধ্যে। সরকারের কোন কোন পদক্ষেপকে পছন্দ করছেন মানুষ। আর কোন পদক্ষেপকে মনে হচ্ছে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। এসব জানতেই ৫৪৩ টি লোকসভার প্রায় ১ লক্ষ্য ৩৯ হাজার মানুষের ওপর সমীক্ষা চালিয়ে ছিল সমীক্ষক সংস্থা সি-ভোটার।
সরকারের বিদেশনীতি, ৩৭০ ধারা বিলোপ, রাম মন্দিরের রায়, লকডাউনের পদক্ষেপ, ভ্যাকসিন বন্টন নীতি সমস্ত বিষয়েই প্রশ্ন করা হয়েছিল জনতাকে। যার যেমন সমর্থন লাভ করেছে মোদী সরকার, কেমন অনেক ক্ষেত্রে সামনে এসেছে অসমর্থনও। এরপর সমীক্ষক সংস্থা প্রশ্ন করে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এই মুহূর্তে সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তি কে?
মোদী, মমতা রাহুল না কেজরিওয়াল কাকে বেছে নিল জনতাঃ
দেশে যখন চলছে সরকারের একাধিক নীতির সমালোচনা, এনআরসি, সিসিএ, কৃষি বিল নিয়ে সরব হয়েছে বিদেশি সংবাদমাধ্যমও। তখনো ফের একবার প্রধানমন্ত্রী পদে যোগ্য ব্যক্তি হিসেবে নরেন্দ্র মোদীকেই বেছে নিল জনতা। বিকল্প হিসেবে ছিল একাধিক নাম, ছিলেন মমতা ব্যানার্জি, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, মনমোহন সিংহ প্রমূখ। কিন্তু জনতার বিচারে ফের একবার এগিয়ে গেলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই।
এই প্রশ্নের উত্তরে প্রায় ৪২ শতাংশ মানুষ বেছে নিয়েছেন নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদীকে, যেখানে রাহুল গান্ধী ভোট পেয়েছেন মাত্র ১২ শতাংশ, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ভোট পেয়েছেন ৬ শতাংশ। ৬ শতাংশ মানুষ বেছে নিয়েছেন অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে। ৪ শতাংশ মানুষ বেঁচেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বাংলায় তৃতীয়বার হ্যাটট্রিক করার পর থেকেই ‘দিল্লিতে মমতা’ এমন একটি গুঞ্জন উঠতে শুরু করেছিল দল তরফে। শুধু তাই নয় সম্প্রতি টুইটারের ট্রেন্ডও করানো হয় দিল্লিতে মমতাদিকে চাই। কিন্তু তার প্রভাব যে এই সমীক্ষায় অন্তত নেই তা আরেকবার স্পষ্ট হয়ে গেল জনতার রায়ে।
সরাসরি প্রধানমন্ত্রী বাছলে কাকে বাছবেনঃ
অন্যদিকে সরাসরি ভোটারদের কাছে আরেকটি প্রশ্ন রেখেছিল সি ভোটার। প্রশ্ন ছিল সরাসরি প্রধানমন্ত্রী রূপে বাছতে হলে কাকে বাছবেন। এই প্রশ্নের অপশনেও ছিলেন নরেন্দ্র মোদী এবং রাহুল গান্ধী। তবে এর উত্তরেও ফের একবার মোদীকেই বেছে নিয়েছেন জনতা। তার পক্ষে রায় দিয়েছেন প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ। যেখানে রাহুল গান্ধীর পক্ষে রায় দিয়েছেন ৩০ শতাংশ। ১০ শতাংশ ভোটার অবশ্য বলছেন, দুজনের কাউকেই পছন্দ নয় তাদের। বাকি ১০% অবশ্য কোনো উত্তর দিতে চাননি। একথা ঠিক যে, দেশে যখন সরকারের শাসন নিয়ে বারবার একাধিক প্রশ্ন উঠছে তখনো তেমনভাবে কোন আঁচ পড়েনি প্রধানমন্ত্রী মোদীর জনপ্রিয়তায়। যদিও লোকসভার বাকি এখনো অনেক গুলো দিন। এরমধ্যে অনেকটাই বদলে যেতে পারে সমীকরণ। তবে এখনো পর্যন্ত মানুষের পছন্দের প্রথম স্থানে রয়েছেন মোদি তা বলাই বাহুল্য।