বাংলা হান্ট ডেস্কঃ করোনা যেমন একদিকে আমাদের সামনে তুলে ধরেছে বেশকিছু মানবিক মুখ, বহু মানুষ এগিয়ে এসেছেন আর্তদের সাহায্য করতে। তেমনি আবার এমন সব মর্মান্তিক ঘটনা তুলে ধরেছে যা চরম অমানবিকতার সবচেয়ে বড় নিদর্শন। একদিকে যেমন ভারত দেখেছে ক্লাস টু এর ছোট্ট বাচ্চা মেয়েটির জন্মদিনের জন্য জমানো টাকা কোভিড আর্তদের সেবায় তুলে দিতে। তেমনি আবার দেখতে হয়েছে শত শত পরিযায়ী শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু। এমনই আরেকটি চূড়ান্ত অমানবিক ঘটনার নিদর্শন দেখল, তেলেঙ্গানা।
ঘটনাটি ঘটেছে তেলেঙ্গানার রাজন্যা জেলার সামরিপেতা গ্রামে। খবর অনুযায়ী, এই গ্রামে করোনা আক্রান্ত এক মহিলার কারণে কোভিড আক্রান্ত হলেন তার পুত্রবধুও। তবে ঘটনাটি আর পাঁচটি সংক্রমণের ঘটনার মতো স্বাভাবিক ঘটনা নয়। শাশুড়িমা আক্রান্ত হয়েছেন শুনে দূরত্ব বজায় রেখেই তার সেবা-যত্ন করছিলেন কিশোরী পুত্রবধূ। কিন্তু তার সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখা হচ্ছে দেখে ক্রমাগত মনের মধ্যে রাগ পুষতে শুরু করেন ওই মহিলা। তাকে কেন সঠিকভাবে সেবা-যত্ন করা হচ্ছে না আগেই একদিন হঠাৎ ই নিজের পুত্রবধূকে জড়িয়ে ধরেন তিনি। বৌমার কাছে জানতে চান “আমি মরে গেলে তোমরা সবাই ভালো থাকতে চাও?”
শুধু তাই নয়, রক্ষা পায়নি ছোট্ট দুই নাতি নাতনিও। খবর অনুযায়ী তাদেরকেও বারবার জড়িয়ে ধরতে তিনি। সেই সূত্র ধরেই এখন তিনজনেই কোভিড আক্রান্ত। প্রায় তিন বছর আগে নিমালিগুট্টা থান্দা উপজাতির এক ব্যক্তির সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন ওই কিশোরী। তিনি উড়িষ্যায় থেকে অটো চালান। গত ৫ দিন আগে মায়ের আক্রান্ত হবার খবর পেয়ে সমস্ত রকম ব্যবস্থা করেন তিনি। পুত্রবধূর তত্ত্বাবধানে ঘরেই কোয়ারেন্টাইন ছিলেন মহিলা। ক্রমাগত চিকিৎসাও চলছিল তার। কিন্তু তারই মধ্যে যে জমে উঠেছিল রাগ এবং অভিমান এরকমভাবে প্রকাশিত হবে তা হয়ত ভাবতে পারেননি কেউই।
কিশোরী পুত্রবধূটিকে এখন পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে রজান্যা জেলার থিমাপুরে তার বোনের বাড়িতে। এমনকি ঘরেও তার জন্য একটু জায়গা দেননি শাশুড়ি। তার এই নিষ্ঠুরতায় হতবাক সকলেই। ঘটনা ছড়িয়ে পড়ার পর উত্তেজনা ছড়ায় গোটা গ্রামেও। সকলেই শাশুড়ির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন জানান।