বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একদিকে যখন দেশে বেড়ে চলেছে করোনা, তখন সরকারের যত টাকা খরচ করা উচিত ছিল তা করছে না তারা। অন্য কোন দেশ হলে এতদিনে প্রায় আট দশ গুণ টাকা খরচ করত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। মোদি সরকারকে কটাক্ষ করে এমনটাই মত রেখেছিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সরকারের কর্মকাণ্ডের প্রতি কটাক্ষ ছুঁড়ে দিলেন দেশের আরেক বরিষ্ঠ নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এর আগেও বিভিন্ন বিষয়ে একাধিকবার মোদি সরকারকে সমালোচনার তীরে বিঁধেছেন অমর্ত্য বাবু। তাসের দেশের অর্থনীতির প্রসঙ্গই হোক কিম্বা কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপ। এবারও ফের একবার আরএসএস এর আয়োজিত একটি অনুষ্ঠান থেকে সরকারকে সিজোফ্রেনিক বলে কটাক্ষ করলেন তিনি।
শুক্রবার রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। এদিন কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সরকার বিপর্যয় মোকাবিলায় যা কাজ করছে তার থেকে অনেক বেশি ক্রেডিট নিতে ব্যস্ত।” তিনি আরো জানান, এই সরকারের সিজোফ্রেনিয়া হয়ে গিয়েছে অর্থাৎ যে রোগে সত্যিকে বিচার করার ক্ষমতা হারিয়ে যায় মানুষের। অমর্ত্য বাবুর মতে সরকারও সেভাবেই চলছে। সংক্রমণ এভাবে লাগাতার বেড়ে চলার পিছনেও সরকারের এই মনোভাবকেই দায়ী করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘সরকার গোটা বিশ্বের কাছে কৃতিত্ব নিতে চেয়েছিল, যেন ভারত বিশ্বকে রক্ষা করবে। সেই ফাঁকে সমস্যা ক্রমেই বেড়ে উঠে দেশময় ছড়িয়ে পড়ে ভারতীয়দের প্রাণ সংশয় তৈরি করে।’’
সাথে সাথে তিনি এও মেনে নেন যে, ভারতীয়দের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা অত্যন্ত বেশি। আর সেই কারণে করোনার বিরুদ্ধে প্রথম থেকে যথেষ্ট ভাল অবস্থায় ছিল তারা। কিন্তু সরকার ব্যস্ত ছিল ক্রেডিট নিতে। আর সেই কারণেই দ্বিতীয় ঢেউ আসার পর রোগের সামনে এতটা অসহায় হয়ে পড়েছে ভারত বর্ষ। এই মুহূর্তে করোনার বিরুদ্ধে সবচেয়ে প্রথম দরকার ভ্যাকসিন। কিন্তু নেই সেই ভ্যাকসিনও চাহিদামত মিলছে না যার জেরে শুরু হয়েছে। যার জেরে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে সংকট। এদিন ক্রমশ ভেঙে পড়া অর্থনীতি নিয়েও সমালোচনায় মুখর হন অমর্ত্য বাবু। তার মতে এই মুহূর্তে সমাজনীতি এবং অর্থনীতিতে বিপুল পরিবর্তন আনা দরকার। সাথে সাথে শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও পরিবর্তনের পরামর্শ দেন তিনি। এখন আগামী দিনে এই বাকবিতন্ডা কোন দিকে গড়ায় সে দিকেই নজর থাকবে সকলের।