বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এগারোর নির্বাচনে ৩৪ বছরের বাম জমানায় অবসান ঘটিয়ে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর থেকেই বাংলার রাজনীতিতে ধীরে ধীরে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে বাম শিবির। গত বিধানসভা নির্বাচনে বেশ কিছু আসন ধরে রাখতে পারলেও এবারের নির্বাচনে একটি আসনও ফিরে পায়নি বাম তথা সিপিআইএম। যার জেরে এই মুহূর্তে যথেষ্ট সংকটে দলের পরিস্থিতি। যদিও আসন শূন্য হলেও করোনাকালে বারবার মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে রেট ভলেন্টিয়ার্সরা। কিন্তু এবার টান পড়ল পকেটে। দেনার দায়ে বিক্রি করে দিতে হলো প্রবীণ কমিউনিস্ট নেতার নামে ভবন তৈরির জন্য কেনা জমি।
ঘটনাটি ঘটেছে মেদিনীপুর শহরের কেরানিতোলা এলাকায়। এই এলাকাতে এক সময় রীতিমত প্রভাব ছিল কমিউনিস্ট পার্টির। কিন্তু ক্রমশ সময় বদলেছে, ধীরে ধীরে নিজেদের প্রাসঙ্গিকতা হারিয়ে ফেলেছে দল। বছর কুড়ি আগে ওই জায়গায় স্বাধীনতা সংগ্রামী তথা মেদিনীপুরে সিপিআইএম পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সুকুমার সেনগুপ্তর নামে ভবন তৈরির জন্য একটি জায়গা কিনেছিল দল। তখন ছিল সিপিআইএমের দিন। কিন্তু বর্তমানে পার্টির দেনা শোধ করার জন্য তিন কোটি টাকায় কেনা সেই সম্পত্তি ছকোটি টাকায় এক প্রোমোটারকে বিক্রি করে দিতে হলো তাদের।
যদিও পার্টির মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক তরুণ রায় জানান, “সুকুমার সেনগুপ্ত ভবন তৈরির জন্য জমি কেনা হয়েছিল এটা ঠিক নয়। আমরা জমি কিনেছিলাম এবং সেটা বিক্রি করা হয়েছে এও ঠিক। আসলে জায়গাটা কেনার সময় অনেক টাকা লোন করা হয়েছিল। এরপর পার্টির নানা কারণে অনেক দেনাও হয়েছে। তবে যাকে বিক্রি করা হয়েছে তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে, ওখানে সুকুমার সেনগুপ্তর নামে একটি ছশো আসনের অডিটোরিয়াম তৈরি করা হবে। শুধু তাই নয় একটি পূর্ণাবয়ব মূর্তিও বসানো হবে সুকুমারদার। সুকুমারদা আমাদের পার্টির প্রতিষ্ঠাতা। তাকে সম্মান জানাবো না এমনটা হতে পারে না।”
যদিও সাথে সাথে তিনি এও জানান যাকে বিক্রি করা হয়েছে এই জায়গায় সম্পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে। তাই তিনি চাইলে যেকোন রকম ব্যবসাই করতে পারেন। সবমিলিয়ে যে পরিস্থিতি জটিল এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। জেলা সিপিআইএমের অন্য নেতাদের মতে, ২০১১ সালের পর থেকে একদিকে যেমন পার্টিতে সদস্য সংখ্যা কমেছে। তেমনি কমেছে চাঁদার পরিমাণও। তার ওপর প্রতিহিংসার জেরে একাধিক ভুয়ো মামলাও করেছে তৃণমূল। সেই খরচ সামলে দল চালাতে প্রায় নাস্তানাবুদ অবস্থা পার্টি কর্তৃপক্ষের। সেই কারণেই এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে স্থানীয় নেতারা এও জানান, সিদ্ধান্ত কারোর উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়নি বরং সমস্ত দিক বিচার-বিবেচনা এবং আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।