বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কথায় বলে ইচ্ছা শক্তিতে কিনা হয়। শারীরিক শক্তি বা বুদ্ধিমত্তা নয় আসল ক্ষমতা হলো ইচ্ছাশক্তি। আর সেটাই আরেকবার প্রমান করলেন তিরুবন্তপুরমের পুলিশ অফিসার অ্যানি সিবা। আপাতত তিনি ভারাকালা থানার সাব ইন্সপেক্টর। কিন্তু একটা সময় জীবন এমন ছিল, তা ভাবলও হয়তো শিউরে উঠতে হয়।
কলেজের প্রথম বর্ষের এক যুবকের প্রেমে পড়েন অ্যানি। আর তারপর পরিবারের সকলের অমতে ওই বয়সেই বিবাহ। কিন্তু দুঃস্বপ্নের জীবন শুরু হয় তার পর থেকে। কারণ অ্যানি সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়ার পর হঠাৎই তাকে ছেড়ে চলে যায় তার প্রেমিক। স্বাভাবিকভাবেই মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। একদিকে সন্তানের চিন্তা অন্যদিকে নেই খাবারের সংস্থান।
তবে অ্যানি ছিলেন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আর তাই কখনও মসলার দোকান, কখনো বীমা কোম্পানির চাকরি হাতের কাছে যা পেয়েছেন তাই করেছেন। সন্তান বড় করার সাথে সাথেই চালিয়ে গেছেন পড়াশোনাও। একসময় প্রেমে পড়ে যে পড়াশোনা প্রায় ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন তা আবার নতুন করে শুরু করেন অ্যানি। দারিদ্র থেকে বাঁচতে এমনকি তাকে এই ভারাকালা এলাকাতেই লেবু জল, বরফ মালাই, আইসক্রিমও বিক্রি করতে হয়।
কিন্তু শত কষ্টেও ছাড়েননি পড়াশোনা। এমনকি পুলিশের চাকরির জন্য একটি কোচিং সেন্টারে ভর্তি হন তিনি। একদিকে ছেলেকে সামলানো অন্যদিকে পড়াশোনা, পুরোটাই একা হাতে সামলেছেন অ্যানি। অবশেষে শেষ হয়েছে দুঃস্বপ্নের রাত। দশ বছর আগে একদিন যে এলাকায় লেবু জল বিক্রি করতেন, এখন সেই এলাকারই দায়ভার অ্যানি সিবার কাঁধে। রোজ কত মানুষের জীবনে নেমে আসে এ ধরনের দুঃস্বপ্ন। কিন্তু হাল ছেড়ে দেন তারা, তাদের জন্যই অনুপ্রেরণার এক চূড়ান্ত দৃষ্টান্ত অ্যানি।