বাংলা হান্ট ডেস্কঃ লকডাউনে পড়াশোনা নষ্ট হয়ে গিয়েছে অনেক গরিব ছাত্র-ছাত্রীরই। কারণ একদিকে যখন বন্ধ স্কুল তখনই অন্যদিকে স্মার্টফোন দরকার অনলাইন ক্লাসের জন্য। অনেক পরিবারেরই সঙ্গতি নেই সন্তানকে স্মার্টফোন কিনে দেবার। আর সেই কারণেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বহু মেধাবী ছাত্র ছাত্রীর পড়াশোনা। এবার এমনই এক ঘটনা সামনে এলো ঝাড়খন্ড থেকে।
ঝাড়খণ্ডের ১১ বছর বয়সী তুলসী কুমারী পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী। এতদিন পর্যন্ত কোন ভাবে কষ্টেসৃষ্টে তার পড়াশোনার সমস্ত দায় দায়িত্ব বহন করছিলেন বাবা ও মা। কিন্তু লকডাউনে হঠাৎই বন্ধ হয়ে যায় স্কুল, আর তারপর থেকেই প্রায় দেড় বছর ধরে ঘরে বসে আছে ছাত্রছাত্রীরা। একই অবস্থা তুলসীরও। অনলাইন ক্লাস শুরু হলেও স্মার্ট ফোন কিনে দেবার ক্ষমতা নেই বাবার। আর তার কারণেই বন্ধ পড়াশোনা।
কিন্তু হাল ছাড়তে রাজি নয় তুলসী, তাই ঘুরে ঘুরে পাকা আম জোগাড় করে রাস্তায় দাঁড়িয়ে সেগুলোই বিক্রি করছিল সে। তার এই হাল না ছাড়া মনোভাব আকৃষ্ট করেছিল স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকেও। তারাই প্রথম তুলে ধরে তুলসীর জীবন কাহিনী। আর তা এতটাই জনপ্রিয় হয়ে যায় যে, মুম্বাইয়ের এক নামী কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অমিয় হাটে সোজা এসে পৌঁছান তুলসীর কাছে।
১২ টি আম তিনি কিনে নেন এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকায়। শুধু তাই নয় সাথে সাথেই তুলসীকে কিনে দেন ১৩ হাজার টাকা দামের একটি ঝাঁ-চকচকে নতুন স্মার্টফোনও। হঠাৎ আসা এই ‘কাকু’র কাছে এমন উপহার পেয়ে রীতিমতো খুশি তুলসী। সংবাদমাধ্যমকে তুলসী জানায়, “আমি প্রতিদিন একটা একটা করে আম যোগাড় করতাম এবং বিক্রি করে পয়সা জমাচ্ছিলাম স্মার্টফোন কেনার জন্য। যাতে আমি আমার পড়াশোনা আবার শুরু করতে পারি।”
অন্যদিকে তুলসীর পাশে দাঁড়াতে পারে খুশি অমিয়ও। তিনি জানান, “তুলসীর অত্যন্ত পরিশ্রমী ছাত্রী। আর আমরা ওর পাশে দাঁড়াতে পেরে ভীষণ খুশি। এতে যদি ও ভালোভাবে ওর পড়াশোনা শেষ করতে পারে তাহলে খুবই ভালো লাগবে।”