বাংলা হান্ট ডেস্কঃ তৃণমূল (All India Trinamool Congress) সাংসদ দেবের (Dev) সংসদীয় এলাকায় ভূতুরে কাণ্ড ঘটে গেল। প্রায় ৫ বছর আগে মৃত ব্যক্তি এখনও তুলছেন রেশন (Ration)। এই ঘটনা সামনে আসার পর চারিদিকে হৈচৈ পড়ে গিয়েছে। অনেকেই আবার বড়সড় দুর্নীতির গন্ধ পেয়েছে এই আজব কাণ্ডে। কারণ শুধু ওই ব্যক্তিই না, এরকম অনেক মৃত ব্যক্তি এখনও রেশন তুলে যাচ্ছেন। স্থানীয় সূত্রের খবর অনুযায়ী, ২০১৬ সালে ২৫ ডিসেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান গৌর মান্না। কিন্তু এখনও তিনি রেশন তুলছেন।
ঘাটাল থানার অযোগনগরের বাসিন্দা গৌর মান্না ২০১৬ সালের ২৫ ডিসেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। বছর ৬৪-র ওই ব্যক্তি অবিবাহিত ছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ‘এক দেশ, এক রেশন” কার্ড প্রকল্পে আধার নম্বর সংযুক্ত করতে যান গৌরবাবুর ভাইপো সুদীপ মান্না। আর রেশন কার্ডের (Ration Card) সঙ্গে আধার সংযোগের সময় ভাইপোর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। কারণ তখন তিনি জানতে পারেন যে, প্রায় ৫ বছর আগে মৃত তাঁর অবিবাহিত কাকা গত মাসেও রেশন পেয়েছেন।
ভাইপো সুদীপবাবু জানান, ২০১৬ সালে তখন রেশন কার্ড ডিজিটাইজেশনের কাজ চলছিল। আর সেই সময় জেঠু গৌর মান্নার রেশন কার্ড ডিজিটাল করার আবেদন জানানো হয়। তবে এরপর তিনি মারা যান। আর মৃত্যুর পর ওনার ডেথ সার্টিফিকেট অযোগনগরের রেশন ডিলার মনোরঞ্জন ঘোষের কাছে জমা দিয়ে রেশন কার্ড বাতিল করার আবেদন জানানো হয়। কিন্তু পাঁচ বছর কেটে গেলেও মৃত জেঠুর কার্ড দিয়ে তোলা হচ্ছে রেশন। সুদীপবাবু এই কাণ্ডের জন্য সরাসরি রেশন ডিলারকেই দায়ী করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, জেঠুর মৃত্যুর পর ডিলার নিজেই জেঠুর নামে রেশন তুলছেন।
সোমবার ঘাটাল মহকুমার ফুড সাপ্লাইয়ের দফতরে রেশন ডিলার মনোরঞ্জন ঘোষের নামে অভিযোগ দায়ের করেন সুদীপ মান্না। রেশন ডিলার মনোরঞ্জনবাবুর কাছে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি অভিযোগ কার্যত স্বীকার করে নিয়ে অবাক করা তথ্য দেন। মনোরঞ্জনবাবু বলেন, ‘এমন দু’চারটে ভুয়ো রেশন কার্ড না থাকলে ডিলারদের চলবে না।”
রেশন ডিলারের এই মন্তব্যের পর এখন প্রশ্ন উঠছে এটাই যে, একজন ডিলারের কাছে যদি দু’চারটে এমন ভুয়ো কার্ড থাকে, তাহলে গোটা পশ্চিমবঙ্গের লক্ষ লক্ষ রেশন ডিলারের কাছে এমন কয়টি ভুয়ো কার্ড রয়েছে? সাধারণ মানুষের জন্য সরকারের তরফ থেকে দেওয়া বিনামূল্যে ও কমদামি খাদ্যশস্য যদি রেশন ডিলাররাই এমন কারচুপি করে ভাগ করে নেয়, তাহলে আদৌকি সাধারণ মানুষ তা পাবে? অথবা সরকারই বা কেন মৃত মানুষদের রেশন দিতে যাবে? এরকম হাজারো প্রশ্ন উঠছে খাড়া করছে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এই কাণ্ড। আর রেশন ডিলারের মন্তব্যে বড়সড় দুর্নীতিরও গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।