বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রানু মন্ডল নামটা শুনলেই অনেকের হয়তো মনে পড়ে যায় রানাঘাট স্টেশনে “এক পেয়ার কা নাগমা হ্যায়” গানটির কথা। গান গেয়ে স্টেশনে ভিক্ষা করা রানু মন্ডলের জীবন সম্পূর্ণ পাল্টে দিয়েছিল এক লহমায় ভাইরাল হয়ে যাওয়া এই গানটি। ইউটিউবার অতনুর হাত ধরে প্রায় স্বপ্নের রাজ্যে পৌঁছে গিয়েছিলেন রানু। বলিউডে হিমেশ রেশামিয়ার সাথে “তেরি মেরি” গানে গলাও মিলিয়ে ছিলেন তিনি। কিন্তু তারপর হঠাৎই আসে এক বড় পরিবর্তন। পরপর বেশ কিছু বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে ফের একবার “পুনর্মূষিক ভবঃ” অবস্থানে ফিরে আসতে হয় রানুকে। অর্থাৎ যে পরিস্থিতি থেকে স্বপ্নের যাত্রা শুরু করেছিলেন তিনি, আবার ফিরে আসতে হয় সেই দুর্বিষহ স্ট্রাগেলের মধ্যেই। এক কথায় বলতে গেলে এটাই হয়তো রানু মন্ডলের জীবন।
কিন্তু এখন কেমন আছেন এই গায়িকা। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে একটি ভিডিও। যেখানে ফের একবার দেখা গিয়েছে রানুকে। তবে এখন তিনি একেবারেই “দিন আনি দিন খাই” গোছের অবস্থায়। রানাঘাটের এক চার্চের পাশে তার মেসোর দেওয়া একটি বাড়িতে এখন থাকেন রানু। মঙ্গলবারের ভাত ফের ফুটিয়ে খান পরের দিন।
“রূপসী রুপা” নামের সোশ্যাল মিডিয়া পেজ থেকে ভাইরাল হওয়া এই ভিডিওটিতে রানু বলেন, “হঠাৎ করেই পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছিল, বেশ ইমপ্রুভ হয়েছিল। হঠাৎ করেই আবার সমস্ত কিছু শেষ হয়ে গেছে এখন আমি ঘরের মধ্যে। সবটাই ভগবানের দান।”
নিজের মেয়ের সম্পর্কেও তেমন কিছু বলতে নারাজ রানু। তবে বোঝা যাচ্ছে, সুখের সময় এসেছিল সকলেই ধীরে ধীরে সময় ফুরোতে তারাও যে যার পথ ধরেছে। সরাসরি না বললেও আক্ষেপ ফুটে ওঠে রানুর গলাতেও। মেয়ে সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তরে রানু বলেন, “এখন তো আমার সাথে কেউ নেই, আমি একাই আছি। ভগবানের ভরসায় আছি।”
সুযোগ পেলে আর কি গান গাইবেন তিনি? এ প্রশ্নেরও জবাব দেন রানু। তিনি জানান, “সেটা পুরোদমে ভগবানের ইচ্ছা। তিনি না চাইলে আমি তো নিজে থেকে কিছু করতে পারবোনা। যখন আমি রেল স্টেশনে বসে থাকতাম হঠাৎই অতনু নামের ছেলেটা এসে আমাকে গান গাইতে বলেছিল। সেটা যে এমন কিছু হয়ে যাবে আমি তো জানতাম না। মনে আছে সম্ভবত গানের বদলে আমাকে চা, বিস্কুট আর কেক খাইয়েছিল। তারপর সেখান থেকে মুম্বাই, কেরালা যেখানে যেখানে গিয়েছি, ভগবানের ইচ্ছা থেকে ছাড়া তো কিছু হয় না।”
একসময় নিজের বেশ কিছু বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে রীতিমতো সমস্যায় পড়েছিল রানু মন্ডলের কেরিয়ার। হঠাৎ উত্থানের পর হঠাৎই ঘটেছিল পতন। আবার জীবনই তাকে দিয়ে গিয়েছে বড় শিক্ষা। আপাতত এভাবেই বাড়িতে কখনও কোকিলের ডাক শুনে কখনও বা কেউ বললে গুন গুন করে ওঠেন রানু মন্ডল। হয়তোবা গলাতে ফিরে আসে পুরনো গানের দু এক কলি।