বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বৃদ্ধাশ্রম কথাটা বললেই প্রত্যেক বাঙালির মনে পড়ে যায় নচিকেতার সেই গান। আর প্রাণপ্রিয় ছেলের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া এক মায়ের গল্প। ছেলের নতুন ফ্ল্যাটের সংসারে ঠাঁই নেই বৃদ্ধ মা-বাবার। এবার চূড়ান্ত অমানবিক এই ঘটনাকে রুখতে বড় পদক্ষেপ নিল অসম সরকার। হিমন্ত বিশ্ব শর্মা (Himanta Biswa Sharma) মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই একাধিক বিষয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে অসম সরকার। এবার বৃদ্ধাশ্রমের সহায় সম্বলহীন মা-বাবাদের জন্যেও বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা।
এদিন এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, “যে সব বৃদ্ধ-বৃদ্ধা নিরাশ্রয়, যাঁদের সন্তান নেই- তাঁরাই শুধু বৃদ্ধাশ্রমে থাকতে পারবেন। কিন্তু ছেলেমেয়ে বাইরে চাকরি করে আর মাসে টাকা পাঠিয়ে বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে দেবে, তেমনটা অসমে চলতে দেওয়া যায় না। এ নিয়ে কড়া আইন আনা হবে।” তিনি এও জানান অসমে ক্রমশই বেড়ে চলেছে বৃদ্ধাশ্রমের সংখ্যা। যার জেরে সমাজের পরিকাঠামো ভেঙে যাচ্ছে। এটা মোটেই কোন শুভ ইঙ্গিত নয়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এর আগেও বৃদ্ধ বাবা মায়েদের জন্য বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে অসম সরকার। জানানো হয়েছে, যদি কোন সরকারি কর্মচারী বাবা-মাকে দেখাশোনা না করেন, তাহলে তার বেতনের একটি অংশ কেটে সোজাসুজি পাঠানো হবে তার বাবা-মায়ের অ্যাকাউন্টে। বৃদ্ধ বয়সে পিতা-মাতার একমাত্র সহায় সম্বল হন সন্তান। কিন্তু অনেক সময়ই দেখা যায় পরিবার থাকা সত্ত্বেও বাবা মায়ের ঠাঁই হয়েছে বৃদ্ধাশ্রমে। দিন কাটছে চরম নিঃসঙ্গতায়। এই পরিস্থিতিতে বদল আনতেই এবার এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানালেন হিমন্ত।
অনেক নিরাশ্রয় বাবা মায়ের জীবনেই এই সিদ্ধান্তের সুপ্রভাব পড়বে এমনটাই মনে করছেন সকলে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, আগামী দিনে অন্যান্য রাজ্যেও এ ধরনের নিয়ম প্রণয়ন করা উচিত। বাংলাতেও সন্তান সন্ততি থাকা সত্ত্বেও অনেক মানুষকে নিয়ে নিঃসঙ্গ জীবন কাটাতে হয় বৃদ্ধাশ্রমে। এ ধরনের আইন তাদের জীবন বদলে দিতে পারে।