কাস্ত্রোর দেশ কিউবায় খাদ্য, ভ্যাকসিন, স্বাধীনতার দাবিতে সরকারের বিরুদ্ধে গণ আন্দোলন

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রায় ৬২ বছর ধরে রাজত্ব করা স্বৈরতান্ত্রিক কমিউনিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে এই প্রথমবার বড়োসড়ো প্রতিবাদে ফেটে পড়ল কিউবা। দক্ষিণ পশ্চিম হাভানার সান অন্তনিও শহর থেকে শুরু করে প্রায় ১৪ টি শহর জুড়ে ছড়িয়ে পড়ল প্রতিবাদ মিছিল। কমিউনিস্ট সরকারের আমলে এর চেয়ে বড় প্রতিবাদ আগে কখনো দেখেনি কিউবা। শুধু বিরোধী দলের সমর্থকরা নয় এই প্রতিবাদে পা মেলান শাসকদলের সমর্থকরাও।

https://twitter.com/MLauraAssis/status/1414341864505892869

কোভিডের কারণে ভেঙে পড়া অর্থনীতি, ভ্যাকসিনের অভাব, চূড়ান্ত দারিদ্র্য এবং বেকারত্ব ও জেল হাজতের ভয়কে দূরে সরিয়ে প্রতিবাদে নামতে বাধ্য করেছে মানুষকে। তাদের গলায় এখন একটাই স্বর, “স্বৈরাচারী কমিউনিস্ট সরকারের পতন চাই।” কিছুদিন আগেই টিভিতে এক অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল দিয়াজ ক্যানেল বলেছিলেন, আমেরিকার উস্কানিতে দেশকে অস্থির করার জন্য কিছু ভাড়াটে এই কাজ করছে। “রাস্তায় বিপ্লবীদের যুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়েছে।”

তার এই কথা শুনে আরও রাগান্বিত হয়ে ওঠে জনতা। একদিকে কোভিড ভাইরাসকে সামলাতে রীতিমতো ব্যর্থ কিউবা সরকার। গত কয়েকদিন ধরেই প্রতিদিন সাত হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন এই মারণ রোগে, রবিবারও মৃত্যু হয়েছে ৪৭ জনের। সরকারের এই ব্যর্থতার জেরে এমনিতেই ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল মানুষ। তার ওপর কিউবার অর্থনীতিতে প্রায় ১১% পতনের জেরে সহ্যের বাঁধ ভেঙে যায়। সম্প্রতি প্রকাশিত রিপোর্টে জানা গিয়েছে, অর্থনৈতিক এই পতন কিউবার ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ। পর্যটন ব্যবস্থার ভেঙে পড়া, চিনির রপ্তানিতে বিরাট পরিমাণ ক্ষতি এই অর্থনৈতিক পতনের অন্যতম কারণ। তার জন্য দায়ী সরকারের বেশকিছু নীতি।

সেই কারণে এবার সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামল জনতা। প্রতিবাদ শুরু হয়েছে বুদ্ধিজীবীদের মধ্যেও। ইতিমধ্যেই সরকারের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি, এবং স্বৈরতান্ত্রিক অত্যাচারের বিরুদ্ধে গান লিখেছেন বেশকিছু গায়ক। এখন রীতিমত ভাইরাল সেই সমস্ত ভিডিও। সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশ্যে এক বিক্ষোভকারী জানান, “আর একদিনও নয়। আমরা আর একদিনও সহ্য করতে পারছিনা। আমাদের খাবার নেই, ওষুধ নেই, স্বাধীনতা নেই। ওরা আমাদের বাঁচতে দিচ্ছে না। আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।”

 

Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর