মায়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে ভোজ খাওয়ানোর বদলে ভাঙা স্কুল নতুন করে গড়ে দিয়ে নজির গড়লেন রামকিশোর 

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ  কথায় বলে মায়ের শিক্ষা সারাজীবন সন্তানের সঙ্গী হয়ে থেকে যায়। আর সেই মা যখন চলে যান তখন সত্যিই অনেকটা খালি হয়ে যায় জীবন। থেকে যায় শুধু স্মৃতি। কিন্তু মায়ের প্রতি সঠিক সম্মান কজন সন্তান দেখাতে পারে? নিদর্শন হয়তোবা হাতে গোনা। এবার এমনই এক দৃষ্টান্ত তৈরি করলেন বিহারের রামকিশোর সিংহ। বিহারের বেগুসারাই থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে মোহনপুর গ্রামের বাসিন্দা রামকিশোর। 

দুদিন আগে ৮৫ বছর বয়সে মৃত্যু হয় তার মা জানকি দেবীর। ভারতীয় রীতি অনুযায়ী, মৃত্যুর পর পালন করতে হয় শ্রাদ্ধানুষ্ঠান। তাতে গ্রাম ব্যাপী লোকজনকে নিমন্ত্রণ করে ভোজও খাওয়াতে হয়। কিন্তু রামকিশোরের ইচ্ছা ছিল অন্য। গ্রামের ভাঙাচোড়া হাইস্কুলের বিল্ডিংটা বারবার চোখে পড়তো তার। তার খুব ইচ্ছে ছিল মায়ের শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে লোক নিমন্ত্রণ করে ভোজ খাওয়ানোর বদলে স্কুল বাড়িটাকে নতুন করে তৈরি করবেন তিনি। 

স্বাভাবিকভাবেই রীতিবিরুদ্ধ এই কাজ করতে গেলে গ্রামের সকলের পরামর্শ নেওয়া দরকার। গ্রামের মিটিংয়ে তাই নিজের ইচ্ছার কথা তুলে ধরেন রামকিশোর। সকলেই তার ইচ্ছাকে প্রাধান্য দেন এবং উৎসাহ দেন এই কাজে। রামকিশোর বলেন, আমাদের গ্রামের ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে শিক্ষা ব্যবস্থায় বিকাশ দরকার। আর তার প্রতি আমাদেরই যত্নশীল হতে হবে। তাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমি। প্রত্যেকে যেভাবে এগিয়ে এসেছেন তা না হলে এই কাজ সম্ভবপর হতো না। 

শুক্রবার মোহনপুর গ্রামে কার্যত ছিল সাজ সাজ রব। জীর্ণ স্কুল বাড়িটির কাজ আবার শুরু হবে ভেবেই ভীষণ আনন্দিত রামকিশোর। তিনি বলেন, আমার গ্রামের প্রত্যেক গ্রামবাসীকে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই। প্রথা ভেঙে যেভাবে তারা আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন প্রতি জেলায় যদি ১০ শতাংশ মানুষ এভাবে পাশে এসে দাঁড়ান তাহলে আগামী দিনে শিক্ষায় বিপ্লব আসবে।


Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর