বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রায় বিশ বছর পরে ফের একবার তালেবান শাসন কায়েম হয়েছে আফগানিস্তানে। আর তারপর থেকেই রীতিমতো সন্ত্রস্ত আফগান নাগরিকরা। রোজই চলছে গণপলায়ন। এমনকি পালিয়ে যেতে গিয়ে মারাও পড়ছেন অনেকে, কিন্তু তাও আফগানিস্তানের তালিবান শাসনে থাকার চেয়ে মৃত্যুকেই বেশি শ্রেয় বলে মনে করছেন তারা। ইতিমধ্যেই আফগান শরণার্থীদের এই বিধ্বস্ত পরিস্থিতি থেকে বের করে আনতে সাহায্য করছে বহু দেশ। তাদের মধ্যে আমেরিকা, ইরান, কানাডা যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে ভারতও। যদিও আফগান শরণার্থীদের বেশিরভাগই আশ্রয় খুঁজছেন ইরান এবং পাকিস্তানে। জানা গিয়েছে ২৬ লক্ষ শরণার্থীর প্রায় ৯০% মানুষই এই দুটি দেশে আশ্রয় খুঁজছেন।
প্রথমেই জানিয়ে রাখি, আমেরিকার কথায় আফগান শরণার্থীদের স্থান দিতে রাজি হয়েছে উগান্ডা, উত্তর মেসিডোনিয়া, আলবেনিয়া এবং কসোভো। এবার আসুন দেখে নেওয়া যাক অন্যান্য কোন কোন দেশ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে আফগানিস্তানের দিকেঃ
ইরানঃ
ইরানে ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে অস্থায়ী শরণার্থী শিবির। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আফগানীদের বসবাসের সুযোগ দেবে তারা। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রধান হুসেইন গাসেমি জানিয়েছেন, শরণার্থী আফগানদের জন্য আপাতত ব্যবস্থা করা হয়েছে ঠিকই তবে “পরিস্থিতির উন্নতি হলে তাদের ফেরত পাঠানো হবে।”
ব্রিটেনঃ
মঙ্গলবার ব্রিটেন আফগানদের পুনর্বাসন বিষয়ে জারি করা হয়েছে সরকারি ঘোষণা। তাতে জানানো হয়েছে, এই কর্মসূচিতে মূলত অগ্রাধিকার পাবেন নারী এবং ধর্মীয় ও অন্যান্য ক্ষেত্রে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা। নতুন পুনর্বাসন কর্মসূচি অনুযায়ী প্রথম এক বছরে ৫০০০ আফগান শরণার্থীকে গ্রহণ করবে তারা।
ভারতঃ
আফগান শরণার্থীদের পুনর্বাসন দিতে আগেই হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ভারত। গত সপ্তাহে আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি এবং শরণার্থীদের কথা মাথায় রেখে বিশেষ ই-ভিসা জারি করার প্রকল্প গ্রহণ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই ভিসার মেয়াদ ছয় মাস। সংখ্যালঘু হিন্দু এবং শিখ সম্প্রদায়ের মানুষদের স্থান দিতেও উদ্যোগী ভারত। তবে ছয় মাসের মেয়াদ শেষ হলে তা নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা এখনও জানানো হয়নি।
আমেরিকাঃ
আমেরিকা আগেই জানিয়েছিল মোট ১০ হাজার আফগান শরণার্থীকে দেশের স্থান দিতে চলেছে তারা।এরমধ্যে তারাও থাকবেন যারা মার্কিন সরকারকে বিভিন্ন সময় সাহায্য করেছেন। জানা গিয়েছে ‘অপারেশন অ্যালায়েন্স রিফিউজি’ -এর অধীনে ইতিমধ্যেই ১২০০ আফগান নাগরিকদের সরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন তারা। আগামী সপ্তাহে এই সংখ্যা বাড়িয়ে সাড়ে তিন হাজার করার পরিকল্পনা নিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
কানাডাঃ
কানাডার পক্ষ থেকে এর আগেই জানানো হয়েছিল ২০ হাজার আফগান শরণার্থীকে নিজেদের দেশে জায়গা দিতে চলেছেন তারা। মেন্ডিসিনো আরও জানিয়েছেন, “আমাদের অবশ্যই সকল সম্ভাবনার জন্য দরজা খোলা রাখতে হবে।” অর্থাৎ আগামী দিনের প্রয়োজন হলে এই সংখ্যা আরও বাড়াতে দ্বিধা করবেনা কানাডা।