বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বাংলাকে তছনছ করে দেওয়া আমফান ঘূর্ণিঝড়ের স্মৃতি কিছুটা ভোলা গিয়েছে ঠিকই, কিন্তু ঝড়ের দাপট যেভাবে ধাক্কা দিয়েছে রাজ্যের শাসক দলকে তার রেশ যেন কিছুতেই কাটছে না। প্রসঙ্গত আমফান পরবর্তী ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন উঠেছিল ত্রান দুর্নীতি নিয়ে। একদিকে যেমন রীতিমতো সরব হয়েছিলেন বিরোধীরা, তেমনি কিছুটা যে ভুল ভ্রান্তি হয়েছে তা মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিল রাজ্য সরকারও। কার্যত এবার ইয়াসের সময় সেদিকে নজরও দিয়েছেন মমতা।
কিন্তু ফের একবার আমফানের ত্রাণ দুর্নীতির মামলাকে কেন্দ্র করে অস্বস্তি বাড়লো রাজ্য সরকারের। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট এবং বনগাঁ এলাকা ভয়ঙ্কর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল আমফানে। আর তার ঠিক পরবর্তী ক্ষেত্রেই উঠেছিল ত্রাণ দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ। যার জেরে তদন্ত শুরু করে পুলিশ, কিন্তু ফের অভিযোগ ওঠে অত্যন্ত লঘু ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এবার পুলিশের কাছে সেই তদন্ত রিপোর্টই তলব করল হাইকোর্ট। জানা গিয়েছে ২ সেপ্টেম্বর ২০২১ এর মধ্যে কোর্টে রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশকে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য বসিরহাটের ২ নম্বর ব্লকের ঘোরারস কুলীন গ্রামে পাঁচ ট্রাক ভর্তি ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো হয় বণ্টনের জন্য। কিন্তু অভিযোগ ওঠে সেই ত্রাণ না দিয়ে মজুদ করা হয়েছে উপ-প্রধানের গোডাউনে। সম্প্রতি কিছুদিন আগেই মালতিপুর স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে দুটি ট্রাক বোঝাই ত্রাণ সামগ্রী উদ্ধার করে গ্রামবাসীরা। যার জেরে এই ঘটনা নিয়ে রীতিমতো উত্তাল হয়ে ওঠে বসিরহাট এলাকা। দায়ের করা হয় জনস্বার্থ মামলা। সেই মামলাতেই আজ প্রশ্নের মুখে পড়তে হল রাজ্যের আইনজীবী কিশোর দত্তকেও৷ বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল তার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন, আমফানের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ে দুর্নীতির ঘটনা কীভাবে ঘটে? শুধু তাই নয় তাকে এও প্রশ্ন করা হয়, মামলায় যে অভিযোগ উঠছে তার কী উত্তর আছে রাজ্যের কাছে? জবাবে অবশ্য ঘটনাটি সবিস্তারে জেনে উত্তর দেওয়ার কথা জানিয়েছেন রাজ্যের আইনজীবী।
সব মিলিয়ে দেখতে গেলে এ ঘটনায় আজ হাইকোর্টের সামনে রাজ্যের অস্বস্তি যে বাড়লো এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। শুধু রাজ্যের আইনজীবী নন এই মামলায় কোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়ে পুলিশও। বিচারপতিরা পুলিশকে প্রশ্ন করেন, সামগ্রিক অভিযোগে পুলিশ কি পদক্ষেপ করেছে?উল্লেখ্য, পুলিশের উপরেও অভিযোগ উঠেছিল লঘু ধারায় মামলা রুজু করার।