বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসের দিন থেকে ফের একবার আফগানিস্তানের বুকে উড়তে শুরু করে তালিবানি নিশান। এখন গোটা আফগানিস্তান তালিবানদের দখলে। আফগানিস্তানের (Afghanistan) বাতাসে এখন শুধুই বইছে বারুদের গন্ধ। তালিবানদের নৃশংস কার্যকলাপের দৃশ্য এখন ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। যা দেখে ভয়ে কাঁপছে গোটা বিশ্ব। এই অসহায় পরিস্থিতি থেকে কবে নিস্তার মিলবে কেউ জানেনা।
কিন্তু সদ্য আফগানিস্তান ফেরত বাংলার ছেলে তমাল ভট্টাচার্যের (Tamal Bhattacharya) মুখে উল্টো সুর শুনে হতবাক বাংলা তথা গোটা দেশের মানুষ। নিমতার বাসিন্দা ওই ব্যাক্তি আফগানিস্তানের একটি স্কুলের বিজ্ঞানের শিক্ষকতা করতেন। আফগানিস্তান থেকে ফিরে বিমানবন্দরে নামার পর থেকেই তালিবান শাসনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ তিনি। কখনও তিনি বলছেন, তালিবানের সঙ্গে নাকি তিনি ক্রিকেট খেলেছেন আবার কখনও বলছেন মাংসের দোকানে কাবাবে বেশি পরিমাণ মাংস দেওয়া হয়েছে।
এখানেই শেষ নয় তিনি দাবি করেছেন তালিবানদের সহযোগিতা ছাড়া তিনি বা তাঁর সহকর্মী কেউই দেশে ফিরতে পারতেন না। এপ্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘তালিবানের নিয়ে কী রাজনীতি আছে, জানি না। তবে আমাদের সঙ্গে ওরা কোনও খারাপ ব্যবহার করেনি। বরং আমরা যখন চলে আসি তখন ওরা বলে, আপনারা চলে গেলে কে আমাদের ছেলে-মেয়েদের পড়াবে!’
প্রতিনিয়ত তালিবানি নৃশংসতার দৃশ্য দেখার পর তমালের কথা কারও কাছেই বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না। এবার তাঁর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন নির্বাসিত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন (Taslima Nasrin)। মহিলাদের উপর ফতোয়া জারি করা তালিবানদের ওপর ক্ষোভ উগরে দিয়ে ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘তালিবানদের মধুর ব্যবহারে তিনি মুগ্ধ হয়ে তাদের গুণগান গাইছেন এখন। তালিবান জঙ্গিরা ভোটে জিতে নয়, বন্দুকের নল ঠেকিয়ে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় বসেছে। জঙ্গিরা ১৪০০ বছরের পুরোনো শরিয়া আইন জারি করবে, শরিয়া আইন কী ভাবে মেয়েদের পাথর ছুঁড়ে হত্যা করে, মেয়েদের বোরখার অন্ধকারে বন্দি করে, মেয়েদের স্কুল কলেজে যাওয়ার, উপার্জন করার, স্বনির্ভর হওয়ার অধিকার ছিনিয়ে নেয়। বাঙালি বাবুটি নিশ্চয়ই জানেন, তারপরও কী করে তিনি বলেন নব্বই দশকের তালিবান আর এখনকার তালিবানে বিস্তর তফাৎ! উল্লেখ্য তসলিমা এখানে তমাল ভট্টাচার্যকে ‘বাঙালি বাবু’ বলে উল্লেখ করেছেন।
সেইসাথে ইংরাজি প্রবাদ বাক্য ‘পুট ইওরসেলফ ইন মাই সুজ’র কথা মনে করিয়ে দিয়ে আফগান মেয়েদের জুতোয় পা গলিয়ে দেখার কথা বলে তিনি ওই শিক্ষকে বলেছেন , ‘তোমার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেছে বলে তালিবান ভালো? তারা অন্যের সঙ্গে কী ব্যবহার করছে তা দেখে তো তাদের সম্পর্কে রায় দিতে হবে! আফগান মেয়েরা যদি বলে আমার জায়গায় দাঁড়িয়ে তালিবানদের সম্পর্কে মন্তব্য করো, তাহলে? তমাল যদি বাঙালি বাবু না হয়ে কোনও স্বাধীনচেতা আফগান মেয়ে হতেন। যে মেয়ে বোরখা বা হিজাবের শৃঙ্খল পছন্দ করেন না। তমাল ভট্টাচার্যের মতো আন্তর্জাতিক স্কুলে শিক্ষকতা করতে চান, স্বর্নিভর হতে চান, তাহলে?’