বাংলাহান্ট ডেস্কঃ করোনা আবহে গত বছর মার্চ মাস থেকে বন্ধ রয়েছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের দরজা। মিলছে না পুষ্টিকর খাবার। যার কারণে আবারও অপুষ্টির অন্ধকারে এগিয়ে যাচ্ছে গ্রাম অঞ্চলের একাধিক শিশু। বাড়ছে উদ্বেগ। করোনার তৃতীয় ঢেউ আসার আগে, যাদের উপর বেশি করে নজর রাখার কথা বলা হয়েছিল, এখন সেই শিশুরাই এখান ভুগছে অপুষ্টির শিকার হয়ে।
তবে করোনা আবহ কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় বিভিন্ন জেলায় স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বড়ি গিয়ে ওজন দেখছেন শিশুদের। আর এর ফলেই ধরা পড়ছে অপুষ্টির শিকার হচ্ছে শিশুরা। পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম বর্ধমান থেকে বীরভূম- সর্বত্রই একই চিত্র বিরাজমান।
করোনার আগে পূর্ব বর্ধমানে অপুষ্ট শিশু ছিল ২৭৩ জন। কিন্তু গত মাসে শিশুদের ওজন পরীক্ষা করে দেখা গেছে, ৫০০ গ্রাম থেকে দেড় কেজি পর্যন্ত ওজন কমার পাশাপাশি বেড়েছে ‘লাল’ শিশুর সংখ্যাও। এক্ষেত্রে ‘লাল’ শিশু অর্থাৎ, চরম অপুষ্ট। মাঝারি অপুষ্ট ‘হলুদ’ এবং স্বাভাবিক শিশুর রঙ হল ‘সবুজ’।
আবার, বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাঁকুড়ার রাইপুরে ৮২ জন, সারেঙ্গায় ৭৭ জন, সিমলাপালে ৭ জন এবং রানিবাঁধে ৭৪ জন অপুষ্ট শিশুর সন্ধান পাওয়া গেছে। হুগলিতে গোঘাট-২ ব্লকের ৯ টি পঞ্চায়েতে ৭২ জন জন শিশু চরম অপুষ্টির শিকার। এই সংখ্যা বাড়ছ উত্তর ২৪ পরগনাতেও। সেইসঙ্গে কমছে, সদ্যজাত শিশুর ওজনের পরিমাণও।
এবিষয়ে আইসিডিএস-প্রকল্পের জেলা আধিকারিক পাপিয়া হালদার চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ‘এই সমস্ত রিপোর্ট রাজ্যে পাঠানো হচ্ছে’।
প্রসঙ্গত, সরকারি হিসেবে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে অন্তঃসত্ত্বা মা এবং শিশু জন্মানোর পরে ছয়মাস পর্যন্ত ওই মাকে খাবার দেওয়া হয়। এরপর ছয়মাস বয়সী শিশু থেকে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের রান্না করা পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হয়। যার মধ্যে ডাল, ভাতের সঙ্গে থাকে ডিম, সয়াবিনের মতো পুষ্টিকর খাবার।
তবে এই করোনা আবহে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের দরজা বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, এই রান্না করা খাবার পরিষেবা দেওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। তার পরিবর্তে শিশুদের অভিভাবকদের প্রতি মাসে চাল, ডাল, আলু দেওয়া হয়। কিন্তু তা দেওয়া হলেও, সেই খাবার পরিবারের আর সকলের মধ্যে ভাগ হয়ে যাওয়ায়,সঠিক পুষ্টির অভাব থেকে যাচ্ছে শিশুদের।