বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সাফ কাপে অষ্টমবার উড়ল ভারতীয় পতাকা। মালদ্বীপ ম্যাচের মতো এবারও নায়ক হয়ে উঠলেন সেই পুরনো সুনীল ছেত্রী। ম্যাচ শেষে ঈগর স্টিমাচ যেভাবে জড়িয়ে ধরলেন সুনীলকে, তাতেই বোঝা গিয়েছিল কার্যত একা হাতে স্টিমাচের পদ কিভাবে বাঁচিয়ে দিয়েছেন সুনীল। গত ম্যাচে লাল কার্ড দেখায় এই ম্যাচে দলের সঙ্গে থাকতে পারেননি কোচ স্টিমাচ এবং শুভাশিস বোস। তবে নেপালের বিরুদ্ধে একবার শেষ বাঁশি বাজতেই ভারতীয় পতাকা হাতে মাঠে নেমে পড়লেন শুভাশিসও। আসলে সাফ কাপ এবার সেভাবে ভালো শুরু করতে পারেনি ভারত। তাই অষ্টম বার জয় মোটেই সহজ ছিল না সুনীল, মনবীর, অনিরুদ্ধদের জন্য।
তবে কার্যত গোটা টুর্নামেন্ট জুড়েই ভারতের ভগীরথ হয়ে ওঠেন সুনীল ছেত্রী। গত ম্যাচেই কিংবদন্তি পেলেকে কোন সংখ্যায় টপকে গিয়েছিলেন এই ভারতীয় ফুটবলার। আর কাল তিনি ছুঁয়ে ফেললেন ফুটবলের আরেক কিংবদন্তি মেসিকে। এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক গোলসংখ্যায় একই আসনে বসবেন সুনীল এবং মেসি। দুজনেরই ঝুলিতে রয়েছে আশিটি করে গোল। কাল অবশ্য মেসিকে টপকে যাওয়ারও সুযোগ ছিল সুনীলের কাছে। যদিও শেষ মুহূর্তে তা হতে দেননি নেপালের গোলকিপার কিরণ লিম্বু।
শুরু থেকে অবশ্য কাল ভারতের সামনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় বৃষ্টি, অন্যদিকে রক্ষণে একটুও ছিদ্র রাখতে দেয়নি নেপালও। ফলে প্রায় ৭০% বল পজিশন থাকা সত্বেও গুরুত্বপূর্ণ গোলের মুখ খুলতে পারেনি ভারত। যদিও ম্যাচের একবারে শুরুতেই এগিয়ে যাওয়ার বড় সুযোগ পেয়েছিল ভারত। কিন্তু চার মিনিটের মাথায় মোহাম্মদ ইয়াসিরের এই দূরপাল্লার শট কিরণকে পরাস্ত করতে পারেনি। যার ফলে প্রথমার্ধ শেষ হওয়া পর্যন্ত গোলের খাতা খোলার সুযোগ হয়নি কারোরই। তবে ভারতের জন্য বড় সুখবর ছিল প্রথমার্ধের পরেই থেমে যায় বৃষ্টি।
আর বৃষ্টি থামতেই দ্বিতীয়ার্ধে দেখা যায় এক নতুন ভারতকে। দুই প্রান্ত থেকে আক্রমণ তুলে আনার সিদ্ধান্ত নেন সুনীলরা। এমনকি কোচ ঈগর স্টিমাচ অতিরিক্ত দায়িত্ব দেন প্রীতম কোটালকেও। যার ফলে রক্ষণের সাথে সাথেই আক্রমণেও সাহায্য করতে শুরু করেন তিনি। আর এই ছকেই শেষ পর্যন্ত পরাস্ত হতে হলো নেপালি রক্ষণকে। ৪৯ মিনিটের মাথায় ডান প্রান্ত থেকে উঠে আসা প্রীতম বল ভাসিয়ে দেন পেনাল্টি বক্সের উদ্দেশ্যে। ঠিক সময় মাথা লাগিয়ে তা জালে জড়িয়ে দিতে কোন ভুল করেননি সুনীল। অন্যদিকে ৫০ মিনিটের মাথায় নেপালকে ধাক্কা দেন সুরেশ। ইয়াসিরের পাস থেকে অসামান্য দক্ষতা গোলকিপার লিম্বুকে ফের একবার পরাস্ত করেন তিনি।
পরপর এই জোড়া গোলে ধাক্কায় ব্যবধান দাঁড়ায় ২-০। ৬৮ মিনিটের মাথায় ফের একবার ব্যবধান বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ চলে এসেছিল ছেত্রীর কাছে। এবার বল জালে জড়াতে পারলে মেসিকেও টপকে যাওয়ার সুযোগ থাকত তার কাছে। কিন্তু এবার আর পরাস্ত হননি কিরণ। যদিও সুনীলের ধাক্কা সামলাতে পারলেও পরিবর্ত হিসেবে নামা আব্দুল সামাদের সামনে ফের একবার পরাস্ত হতে হয় নেপালি গোলকিপারকে। ম্যাচের একেবারে অতিরিক্ত সময়ে ব্যবধান বাড়িয়ে ৩-০ করে দেন তিনি। এই জয়ের পর উচ্ছ্বসিত সুনীলও। তিনি জানান এই জয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল ভারতের জন্য, কারণ এবার সাফ কাপে আশানুরূপ শুরু করতে পারেনি ভারত।