বাংলা হান্ট ডেস্কঃ চীনে রাষ্ট্রপতি জিনপিংয়ের নেতৃত্বে চলা স্বৈরাচারী শাসনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মামলা লাগাতার ফাঁস হয়েই আসছে। বিশেষ করে চীনের পশ্চিমে অবস্থিত শিনজিয়াং প্রান্তে উইঘুর মুসলিমদের উপর করা অত্যাচারের কাহিনী নিয়ে বারবার নাক কেটেছে জিনপিং সরকারের। যদিও, এর পরেও তাঁদের উপর অত্যাচার কমেনি। চীনের এই স্বৈরাচারী শাসন থেকে পালিয়ে বিদেশে চলে যাওয়া অনেকেই এই অত্যাচারের কাহিনী উজাগর করেছেন। আর এবার চীনের এক পুলিশকর্মী উইঘুরদের প্রতি হওয়া বর্বরতার ভয়ানক সত্য সবার সামনে তুলে ধরলেন।
"It's normal that some people die".
"During the train transportation we do not give them food."
Former Chinese police officer reveals brutal tactics used on Uyghurs in internment camps.https://t.co/w0rw73z19h pic.twitter.com/XW5DhvDbtM
— RadioFreeAsia_Uyghur (@RFA_UyghurNews) October 13, 2021
ব্রিটিশ মিডিয়া ‘দ্য মেইল”-এ দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে চীনের পুলিশকর্মী নানান অবাক করা তথ্য প্রকাশ্যে এনেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ওই পুলিশকর্মীর পরিচয় গোপনই রেখেছে। যদিও, ওই পুলিশকর্মী এমন কোন কিছু নথি প্রকাশ করেছেন, যা দিয়ে চীনে উইঘুরদের উপর হওয়া অত্যাচারের কাহিনী স্পষ্ট হয়।
পুলিশকর্মী জানিয়েছেন যে, চীনা জওয়ানরা শিনজিয়াং প্রান্তে বন্দি উইঘুর মুসলিমদের উপর অত্যাচারের জন্য সবার আগে তাঁদের চেয়ারে বেঁধে রাখে। প্রথমে তাঁদের মারধর করা হয়। তাঁদের চাবুক দিয়েও আঘাত করা হয়। পুলিশকর্মী জানান, অনেক সময় এমন অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে উইঘুর মুসলিমদের প্রাণও চলে যায়।
পুলিশকর্মী জানান যে, অনেক সময় অত্যাচার সহ্য না করতে পারা উইঘুর মুসলিমদের দৃষ্টিশক্তিও হারিয়ে যায়। এরপর তাঁদের না ঘুমোনোরও শাস্তি দেওয়া হয়। তিনি জানান, একবার চোখের পাতা ফেললে তাঁকে এমন মারধর করা হয় যে, সে বেহুঁশ হয়ে যায়, আর হুঁশ ফিরলে তাঁকে আবারও মারধর করা হয়। অনেক পুলিশকর্মী হাতুড়ি দিয়ে বন্দির পা পর্যন্ত ভেঙে দেয়।
Uyghurs tortured and beaten to death in Xinjiang, former Chinese police officer reveals https://t.co/yBwzlUYS7B
— Benedict Rogers 羅傑斯 (@benedictrogers) October 11, 2021
পুলিশকর্মী জানান, তৃতীয় পর্যায়ের টর্চারে উইঘুর মুসলিমদের যৌনাঙ্গে বিদ্যুতের শক দেওয়া হয়। তিনি জানান, উইঘুর মুসলিম মহিলাদের দুই হাতে হাতকড়া পরিয়ে তাঁদের হাত বারবার মেঝেতে ঠোকা হয়। এর কিছুক্ষণ পরেই তাঁদের হাত দিয়ে রক্ত ঝড়ে পড়ে। পুলিশকর্মী জানান, তিনি এক ১৪ বছরের বাচ্চাকেও এরমন অত্যাচারের শিকার হতে দেখেছেন।
দ্য মেইলের রিপোর্ট অনুযায়ী, ৩৯ বছর বয়সী ওই পুলিশকর্মী তাঁদের কাছে কিছু ছবি, পুলিশের অত্যাচারের কিছু নথি আর ২০১৫ সালে রাষ্ট্রপতি জিনপিংয়ের দেওয়া আধিকারিক নির্দেশও জমা দিয়েছেন। ওই নির্দেশে জিনপিং উইঘুরদের উপর নজরদারি করার পাশাপাশি তাঁদের তদন্ত করারও কথা বলেছিলেন।