বাংলা হান্ট ডেস্কঃ চীন (China) সর্বদাই তাঁদের প্রযুক্তি নিয়ে গর্ব করে থাকে। তাঁদের ধারণা বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রযুক্তি তাঁদের কাছেই রয়েছে। আর তাঁরা এটা ফলাও করে প্রচারও করে। বিশেষ করে চীনা সরকারের মুখপত্র গ্লোবাল টাইমস তাঁদের করা বিভিন্ন আবিষ্কার ও বিভিন্ন প্রযুক্ত নিয়ে দুহাত ভরে প্রশংসা করে। তবে, চীনের আবিষ্কার বা প্রযুক্তির মান তখনই বোঝা যায়, যখন চীন সেগুলো অন্য কোনও দেশের কাছে বিক্রি করে।
সম্প্রতি কিছু মিডিয়া রিপোর্টে উঠে এসেছে যে, চীন তাঁদের উন্নত প্রযুক্তির হাতিয়ার, বিমান, রণতরী ও ড্রোন পাকিস্তান (Pakistan) ও বাংলাদেশের (Bangladesh) মতো দেশের কাছে বিক্রি করেছিল। আর সেগুলো বছরখানেই যেতে না যেতেই বিকল হয়ে পড়ছে। এমনকি পাকিস্তান, বাংলাদেশ বারবার সেগুলো ঠিক করে দেওয়ার আর্জি জানালেও, চীনের তরফ থেকে কোনও উচ্চবাচ্য করা হচ্ছে না। ভারতে (India) একটা কথার বেশ প্রচলন রয়েছে, সেটা হল ‘চীনের মালের কোনও গ্যারান্টি নেই” পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সঙ্গে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক ঘটনা সেই প্রচলনকেই স্বীকৃতি দেয়।
চীন আরেকটি দিক থেকেও নিজেদের নিয়ে খুব বড়াই করে, তাঁদের মতে বিশ্বের সবথেকে বড় হ্যাকার (Hacker) তাঁরাই তৈরি করতে পারে। এমনকি তাঁদের ফায়ারওয়াল সিস্টেমও বাকি বিশ্বের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এবং উন্নত। কিন্তু তাঁদের এই ভ্রান্ত ধারণা ভেঙে দেয় ভারতের কিছু হ্যাকার্সরা। চীনের সরকারি মুখপত্র গ্লোবাল টাইমস দাবি করেছে যে, কিছু ভারতীয় হ্যাকার্স তাঁদের গোপন নথি চুরি করার প্রচেষ্টা চালিয়েছে।
গ্লোবাল টাইমস ‘Evil Flower’ নামের একটি ভারতীয় হ্যাকার্সদের গ্রুপের বিরুদ্ধে তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ নথি হাতিয়ে নেওয়া প্রচেষ্টা করার অভিযোগ করেছে। গ্লোবাল টাইমসের মতে, ভারতীয় হ্যাকার্সরা চীন, পাকিস্তান আর নেপালে থাকা চীনা দূতাবাসে তাঁদের জনকল্যাণ অভিযান হ্যাক করার প্রচেষ্টা চালিয়েছিল। গ্লোবাল টাইমস এও জানিয়েছে যে, এই ভারতীয় হ্যাকার্সদের গ্রুপকে ভারত সরকার সমর্থন করছে। ওই গ্রুপ চীন দ্বারা বিশ্বকে কোভিড থেকে উদ্ধার করার প্রচেষ্টায় বাধা সৃষ্টি করছে আর চীনের মহাকাশ অভিযানকে ব্যর্থ করার প্রচেষ্টায় লেগে আছে তাঁরা।
চীনের এই অভিযোগ শুনে একটাই কথা বলা যায় যে, ‘চোরের মায়ের বড় গলা।” যেই চীনের বিরুদ্ধে গোটা বিশ্ব তাঁদের ডেটা চুরি করার অভিযোগ করে থাকে, তাঁরাই এখন ভারতকে নৈতিক হওয়ার উপদেশ দিয়ে সাধু সাজার চেষ্টা করছে। কিছুদিন আগে চীন নিজেদের GPS সিস্টেম Beidou-কে বন্ধ করে দিয়েছিল। তাঁদের আশঙ্কা ছিল, ভারতীয় হ্যাকাররা তাঁদের এই সিস্টেম হ্যাক করে নিতে পারে। এর থেকে এটাই বোঝা যায় যে, চীন সস্তার প্রযুক্তি তৈরি করতে গিয়ে নিজেদের সিস্টেমে বড়সড় গলদ রেখে দিচ্ছে, যার দরুন তাঁদের ভুগতেও হচ্ছে।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি তাঁদের ন্যাভিগেশন সিস্টেম Beidou-কে এক বছর ব্যবহার করার পর বন্ধ করে দিয়েছে। ভারতীয় সেনা দ্বারা নেওয়া পদক্ষেপের পর চীন এই কাজ করতে বাধ্য হয়েছে। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে, PLA-র এই পদক্ষেপ ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকায় তাঁদের গতিবিধি লোকানোর জন্য নিয়েছে।
উল্লেখ্য, ভারতীয় সেনা উত্তর আর পূর্ব সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়ে দিয়েছে। নিজেদের উন্নত নজরদারি প্রণালীর সঙ্গে ভারতীয় সেনা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় PLA-র গতিবিধির স্পষ্ট ছবি আর বাস্তবিক সময়ের তথ্য প্রাপ্ত করতে সক্ষম। আর এই কারণে চীন ভেবে নেয় যে, তাঁদের ন্যাভিগেশন সিস্টেম BeiDou-কে হ্যাক করে চীনের সেনার উপর নজরদারি চালাচ্ছে ভারত।