কার্তিক পুজোর শুভক্ষণে রইল পাল বাড়ির তিন কার্তিকের রহস্য

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ পৌরাণিক দেব তথা মহাদেব এবং পার্বতীর পুত্র কার্তিক (Kartika) প্রাচীনকাল থেকেই ভারতের প্রায় সর্বত্রই পূজিত হয়ে আসছেন। ভক্তদের কাছে দেব কার্তিক একাধিক নামে খ্যাত। যথা- নমুচি, স্কন্ধ, ষড়ানন, গুহ, বিশাখা, দেবসেনাপতি, কুমার শক্তিপতি ইত্যাদি।

দেবতা কার্তিকের (Kartika) অপর নাম ষোড়ানন। ফলে তার সঙ্গে ষষ্ঠী মাতার যোগ বর্তমান। ষোড়ানন শিশুদের সম্পূর্ণ বিকাশ পর্যন্ত অর্থাৎ বড় হওয়া পর্যন্ত সুরক্ষা দিয়ে থাকেন। তার কৃপায় ধনলাভ তথা পুত্রলাভের সম্ভাবনা থাকে। তবে দক্ষিণ ভারতে কার্তিক পুজোর জাঁকজমক সর্বেপক্ষা বেশি, তা কিন্তু বলার অপেক্ষা রাখে না।

2 49

পূর্বে কার্তিক পুজোর ঘনঘটা থাকলেও বর্তমানে তা কিছুটা মলিন হয়ে গেছে। পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার চুঁচুড়া, বাশবেড়িয়া, কাটয়া প্রভৃতি অঞ্চলে কার্তিক পুজোর জৌলুস এখনও বর্তমান। এছাড়া গণিকা নামক এক সমাজে কার্তিক পুজো বেশ জনপ্রিয়।

কার্তিক পুজোর দিন কাটোয়ায় বড়সড় মিছিলের আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি মন্ডপের লোকজন ও ঠাকুর নিয়ে শুরু হয় শোভাযাত্রাও। এই শোভাযাত্রায় কার ঠাকুর আগে যাবে এই নিয়ে কখনও কখনও লড়াইও বেঁধে যায়।

8 1 1

পশ্চিম বর্ধমানে গৌর বাজারে আনুমানিক ১৬৬ বছর ধরে দেবতা কার্ত্তিক পূজিত হয়ে আসছেন বলেই মনে করা হয়। এই পুজোর এক অদ্ভুত বিশেষত্ব হল তিনটি মূর্তি মাধেয়মেই এই পূজা সম্পন্ন করা হয়, বড় কার্তিক, মেজো কার্তিক এবং ছোট কার্তিক। এই ঘটনার পেছনে একটি গভীর ইতিহাসও রয়েছে।

শোনা যায়, আনুমানিক ১৭০ বছর পূর্বে পাল জমিদারির রমরমা তুঙ্গে থাকলেও জমিদার জয় নারায়ণ পাল, শ্যাম পাল ও লক্ষ্মী নারায়ণ নিঃসন্তান ছিলেন। একদিন স্বপ্নাদেশের মাধ্যমে জানতে পারেন কার্তিকের পুজো করলে তাদের উত্তরসূরী পৃথিবীর আলো দেখতে পাবে। ফলে তারা তিন ভাই একযোগে একটি মন্দির বানিয়ে তাতে তিনটি পৃথক মূর্তিপুজো করেন এবং সন্তানলাভ করেন। সেইসময় থেকেই এখানে কার্তিক পুজোর প্রথা চালু হয়, যা এখনও প্রচলিত আছে।


Smita Hari

সম্পর্কিত খবর