বাংলাহান্ট ডেস্ক: ‘জিন্দেগি বড়ি হোনি চাহিয়ে, লম্বি নেহি’! নিজের ছবির সংলাপ অনেকটাই সত্যি হয়ে গিয়েছিল রাজেশ খান্নার (rajesh khanna) বাস্তব জীবনে। অভিনয় কেরিয়ারে মাইলফলক সৃষ্টি করেছিলেন তিনি। বলিউডের প্রথম ‘সুপারস্টার’ তকমা দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। প্রভূত যশ খ্যাতি সত্ত্বেও শেষ জীবনে রোগশয্যায় নিঃসঙ্গ দিন কাটিয়েছিলেন অভিনেতা। ২০১২ সালে ৬৯ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ‘কাকা’।
১৯৬৯ থেকে ১৯৭১ এর মধ্যে ১৫ টি সুপারহিট ছবি উপহার দিয়েছিলেন তিনি ভারতীয় সিনেমার দর্শকদের। দু হাতে টাকা কামিয়েছেন। তবে তাঁর কেরিয়ার সবসময় যে শীর্ষেই থেকেছে এমনটা নয়। উত্থান পতনের মুখোমুখি হতে হয়েছিল রাজেশ খান্নাকেও। আর এর সঙ্গেই জড়িয়ে তাঁর ‘আশীর্বাদ’ বাংলোর নাম।
মুম্বই এর কার্টার রোডে অবস্থিত বিলাসবহুল ‘আশীর্বাদ’ বাংলোটি জীবিতাবস্থায় ছিল রাজেশ খান্নার সম্পত্তি। তিনি আবার বাংলোটি কিনেছিলেন বলিউড অভিনেতা রাজেন্দ্র কুমারের কাছ থেকে। সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, বাংলোটির প্রথম মালিক ছিলেন রাজেন্দ্র। মাত্র ৬০ হাজার টাকায় কিনেছিলেন তিনি বাড়িটি।
শোনা যায়, তখন থেকেই নাকি ‘ভূতুড়ে’ বলে বদনাম ছিল ওই বাংলোর। কিন্তু রাজেন্দ্রর বন্ধু মনোজ কুমার তাঁকে পরামর্শ দেন, ওসব গুজবে কান না দিয়ে গৃহপ্রবেশের পুজো করে বাংলোতে বসবাস শুরু করতে। কিন্তু ‘ভূতুড়ে’ বাড়িতে থাকতে শুরু করে আখেরে লাভই হয়েছিল অভিনেতার। একটার পর একটা ছবি হিট করতে থাকে রাজেন্দ্রর।
সাফল্যের চূড়ায় উঠে মুম্বইয়ের অভিজাত এলাকা পালি হিলে অপর একটি বাড়ি কেনেন রাজেন্দ্র কুমার। এদিকে রাজেশ খান্না তখন সবে সবে পা রেখেছেন বলিউডে। সে সময়ে রটে গিয়েছিল ওই বাংলো সৌভাগ্য বহন করে আনে। সাফল্যের স্বাদ চেখে দেখতে চেয়েছিলেন রাজেশ খান্নাও। ওই বাংলোই তিনি কেনেন ৩.৫ লক্ষ টাকায়।
অদ্ভূত ভাবে তারপর থেকেই কেরিয়ারে যেন জোয়ার আসে রাজেশ খান্নার। তিনি সুপারস্টার উপাধি পান। কিন্তু সুখ বেশিদিন টেকেনি। হঠাৎ করেই ধসে পড়তে থাকে তাঁর সাফল্যের সিঁড়ি। অশান্তির কালো ছায়া ঘিরে ধরে ব্যক্তিগত জীবনকেও। স্ত্রী ডিম্পল কাপাডিয়া দুই মেয়েকে নিয়ে ঘর ছাড়েন।
তারপর থেকেই যেন বদলে যান রাজেশ খান্না। শোনা যায়, ওই বাংলো নাকি দুঃস্বপ্নে তাড়া করে বেড়াত অভিনেতাকে। সাধের বাড়ি ছেড়ে নিজের অফিসে থাকতে শুরু করেন তিনি। ওই বাংলোতে থাকার সময়েই অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছিলেন রাজেশ খান্না। সে অসুখ আর কখনো সারেনি। ২০১৪ সালে শশী শেট্টি নামে এক ব্যবসায়ী ৯৫ কোটি টাকায় কিনে নেন আশীর্বাদ বাংলো। ২০১৬ তে ভেঙে হয়ে দেওয়া হয় রাজেশ খান্নার বাড়ি।