মধ্যপ্রদেশে গ্রাম ছেড়ে পালাতে বাধ্য হওয়া হিন্দুদের পাশে দাঁড়াল শিবরাজ সরকার, চালাল বুলডোজার

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মধ্যপ্রদেশের রতলাম জেলার সুরানা গ্রামের হিন্দু জনগোষ্ঠী মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ এনে ব্যাপকভাবে গ্রাম ছাড়ার হুমকি দিয়েছিল। তবে বিষয়টি নজরে আসতেই তৎপর হয়ে ওঠে প্রশাসন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র স্থানীয় প্রশাসনের একটি দল গ্রামে পাঠিয়ে রিপোর্ট নেন। প্রশাসনের তৎপরতার পর হিন্দু সম্প্রদায় তাদের বাড়ির গায়ে লেখা বাড়ি বিক্রির বিজ্ঞাপন মুছে ফেলেছে।

এই বিষয়টি নজরে আসার পরে রতলামের জেলার জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপার গ্রামটির পরিদর্শন করেন। বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে জেলাশাসক কুমার পুরুষোত্তম এবং এসপি গৌরব তিওয়ারি সহ অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মীরা সুরানা গ্রামে পৌঁছে লোকজনকে আশ্বাস দেন।

রটলামের জেলাশাসক কুমার পুরুষোত্তম বলেছেন, “রতলামের সুরানা গ্রামে ২ জনের মধ্যে সামান্য বিবাদের খবর পাওয়ার পর এসপি এবং আমি সেখানে গিয়েছিলাম। দখলের বিষয়টির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে একটি অস্থায়ী পুলিশ পোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। এখন আর কাউকে পালাতে হবে না।”

হিন্দুদের অভিযোগের পর শিবরাজ প্রশাসন ওই গ্রামে দখল করে তৈরি করার বাড়িগুলো পরিমাপ করে এবং বুলডোজার চালিয়ে ড্রেনের ওপর শাহজাদ আলি নামের এক ব্যক্তির নির্মিত ছয়টি দোকান ভেঙে দেয়। এরপর রাতে ওই গ্রামের ময়ূর খান, শেরু ওরফে শের আলী ও হায়দার আলীর বিরুদ্ধে ১৫১ ধারায় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয় পুলিশ।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সুরানা গ্রামে মুসলিমদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে হিন্দুরা গ্রাম ছাড়ার হুমকি দিয়েছিল। গ্রামের হিন্দু পরিবারগুলি জেলাশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছিল যে তারা তাদের জন্মভূমি ছেড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে। হিন্দু পরিবারগুলোকে জানায়, ‘দুই পক্ষের মধ্যে বিবাদ এতটাই বেড়ে যায় যে, অত্যাচারিত হয়ে তাঁদের গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। আর এই কারণেই সব হিন্দু পরিবার সেখান থেকে গণ পলায়ন করবে। শুধু তাই নয়, গ্রামের অনেক হিন্দু পরিবার তাদের বাড়ির বাইরে ‘বাড়ি বিক্রির জন্য’ বিজ্ঞাপনও দিয়েছে।”

গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পুলিশ তাদের সাহায্য করছে না। উল্টো তার বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে। ভুক্তভোগী হিন্দুদের অভিযোগ, এর আগেও এরকম ঘটনার পর  তারা এসপির কাছে অভিযোগ নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু, এসপি গৌরব তিওয়ারি তাঁদের বাড়ি ভাঙা এবং জাতীয় নিরাপত্তা আইনে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। গ্রামের পরিস্থিতি ‘স্বাভাবিক’ বলে জানিয়েছেন তিনি।


Koushik Dutta

সম্পর্কিত খবর