বাংলা হান্ট ডেস্ক: আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি চিন সফরে যাচ্ছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এই সফরের উদ্দেশ্য হল মূলত দু’টি। প্রথমত, চিন থেকে ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ নেওয়া এবং দ্বিতীয়টি হল China-Pakistan Economic Corridor (CPEC)-এর কাজ পুনরায় শুরু করার আশ্বাস দেওয়া।ইতিমধ্যেই প্রায় দু’বছর ধরে এটির কাজ বন্ধ থাকায় চিন রীতিমতো ক্ষুব্ধ। কারণ এই প্রকল্পে প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ব্যয় করে ফেলেছে জিনপিংয়ের দেশ।
এদিকে, গত বছর দাসু বাঁধ প্রকল্পে কর্মরত নয়জন চিনা ইঞ্জিনিয়ারকে সন্ত্রাসীরা হত্যা করে। তাই সেদেশে সফরের আগে CPEC-তে কর্মরত ৩,৩৫৫ জন চিনা নাগরিকের নিরাপত্তার জন্য ১১ হাজারেরও বেশি নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান সরকার।
একটি সংবাদ সংস্থার সূত্র অনুসারে জানা গিয়েছে যে, ইমরান খান সরকার পাঞ্জাব প্রদেশের সরকারকে ইতিমধ্যেই চিনা নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। পাঞ্জাব প্রদেশে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ অর্থাৎ পিটিআই’র সরকারই বর্তমানে রয়েছে এবং ওখানকার মুখ্যমন্ত্রী হলেন উসমান বুজদার।
তথ্য অনুযায়ী আরও জানা গিয়েছে যে, চিনাদের সুরক্ষার জন্য একটি বিশেষ ইউনিটও গঠন করা হয়েছে। এই ইউনিটে অধিকাংশজনই থাকবেন সেনা সদস্য। এছাড়াও এখানে রেঞ্জার্স ও স্পেশাল প্রোটেকশন ইউনিটের কর্মচারীদের মোতায়েন করা হচ্ছে। পাশাপাশি, এই চিনা নাগরিকদের সুরক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকেও।
রিপোর্ট অনুযায়ী, পাকিস্তান সরকার শুধু যে বর্তমানে CPEC নিয়ে চিনের অসন্তোষ কমানোর চেষ্টাই করছে তা না, বরং তাদের অন্য ভাবনাও রয়েছে। আসলে, পাকিস্তান এখন চিনকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছে যে, পাকিস্তানে আসা প্রতিটি চিনা নাগরিককে কড়া নিরাপত্তা প্রদান করবে তারা। এর কারণ হল, CPEC ছাড়াও অনেক চিনা কোম্পানি রয়েছে যারা পাকিস্তানের বিভিন্ন জায়গায় কাজ করছে। পাশাপাশি, সেগুলিতে শুধুমাত্র চিনা নাগরিকরাই কর্মকর্তা হিসেবে রয়েছেন।
সম্প্রতি এই প্রসঙ্গে পাকিস্তানে নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূত নং রোং সে দেশের সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন। এই দু’জন ছাড়া ওই বৈঠকে অন্য কোনো কর্মকর্তাদেরকে রাখা হয়নি। এমনকি, পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না।
আসলে চিন ভালো করেই বুঝে গিয়েছে যে, পাকিস্তানে সরকারের মর্জি মত কিছুই হয়না। বরং এখানে সেনাবাহিনীই সবকিছু। তারা যা মনে করে, যে কোনো সরকারকে সেই সিদ্ধান্তই নিতে হয়। যদিও শেষে ওই সিদ্ধান্ত কোনো সরকারি মুখপাত্র বা মন্ত্রীদের কাছ থেকে ঘোষণা করে দেওয়া হয়।